শোরুম ব্যবসা শুরু করার নিয়ম

 

শোরুম ব্যবসা শুরু করার নিয়ম

শোরুম ব্যবসা হচ্ছে খুবই লাভজনক ব্যবসা।আমাদের দেশে এমন অনেক ব্যবসায়ী আছে যারা শুধুমাত্র শোরুম ব্যবসা করার মাধ্যমে লাখোপতি হয়েছেন। 

 

আপনি শোরুম ব্যবসা খুব সহজেই শুরু করতে পারবেন এবং এই ব্যবসার সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো এখানে পরিশ্রম অনেক কম লাগে।তাই আপনার যদি পর্যাপ্ত পরিমাণে মূলধন থেকে থাকে তাহলে আপনি চাইলে খুব দ্রুতই এই ব্যবসা শুরু করতে পারেন এবং লাভবান হতে পারেন।

 

আজকের আর্টিকেলে আলোচনা করা হবে কিভাবে আপনারা শোরুম ব্যবসা শুরু করবেন এবং শোরুম ব্যবসা লাভজনক কিছু আইডিয়া নিয়ে। তাহলে চলুন দেরী না করে শুরু করা যাকঃ

 

শোরুম ব্যবসা শুরু করার নিয়ম

শোরুম ব্যবসা শুরু করার আগে আপনাকে কিছু বিষয় নিয়ে পরিকল্পনা করতে হবে। এই সকল বিষয়গুলো নিয়ে যদি আপনি আগে থাকতেই পরিকল্পনা করে ফেলতে পারেন তাহলে ব্যবসাটি আপনার জন্য আরো অনেক সহজ হয়ে যাবে। যেমনঃ

১.দোকান দেওয়ার স্থান

২.প্রয়োজনীয় মূলধন

৩.দোকানের ডেকোরেশন

৪.দোকানের মার্কেটিং

 

দোকান দেওয়ার স্থান

আপনাকে শোরুম ব্যবসায় সফল হতে হলে অবশ্যই ভালো একটি স্থানে আপনাকে শোরুম দোকান দিতে হবে। দোকান এমন স্থানে দিলে হবে না যেখানে মানুষের চলাচল খুবই কম।

 

আপনি যদি দোকানটি মার্কেটের আশেপাশে দিতে পারে তাহলে খুবই ভালো হয় বাড়তি কাস্টমার পাওয়ার জন্য।এতে করে আপনার দোকানটি অনেকের চোখে পড়বে এবং এই দোকানে বিক্রির পরিমাণ আরো অনেক বেড়ে যাবে।

 

তাই আপনি চাইলে বাজারের ভালো একটি স্থানে দোকান ভাড়া নিয়ে এই ব্যবসাটি শুরু করতে পারেন।

 

প্রয়োজনীয় মূলধন

আপনাকে শোরুম ব্যবসা করার জন্য অবশ্যই প্রয়োজনীয় মূলধনের দরকার হবে। শোরুম ব্যবসাটি করার জন্য ভালো মূলধনের প্রয়োজন। শোরুম ব্যবসার মধ্যে অনেক ধরনের আইডিয়া রয়েছে।আইডিয়া ভেদে শোরুম ব্যবসার পুঁজি কম বেশি লাগতে পারে। ৫০-৬০ লক্ষ টাকা পুঁজি করার মাধ্যমে প্রথম পর্যায়ে আপনারা শোরুম ব্যবসা শুরু করতে পারবেন।

 

দোকানের ডেকোরেশন

আপনার দোকানটির যদি ভালো একটি স্থান দেখে দেওয়া হয়ে যাই এবার আপনাকে যেটি করতে হবে সেটি হচ্ছে দোকানের ডেকোরেশন। আপনার দোকানটি সুন্দর করে যদি ডেকোরেশন না করেন তাহলে কাস্টমারদের চোখে পড়বে না যার ফলে আপনি কাস্টমার হারাতে পারেন।

 

তাই অবশ্যই দোকানটি সুন্দর করে ডেকোরেশন করে ফেলতে হবে যাতে আপনার কাস্টমাররা খুব সহজেই দোকানটি পছন্দ করে থাকেন। ব্যাবসায়িক সফলতা পাওয়ার পেছনে এটি একটি কারণ হতে পারে।

 

শোরুম দোকানের মার্কেটিং

সাধারণত এই ব্যবসায় সফলতা অনেকাংশে নির্ভর করে থাকে দোকানের মার্কেটিং করার উপরে। দোকানের মার্কেটিং করার মাধ্যমে আপনারা খুব সহজেই আপনাদের শোরুম ব্যবসার জন্য কাস্টমার বাড়াতে পারবেন।

 

আপনি দোকানটির যেই স্থানে দেন না কেন আপনার দোকানটি পরবর্তী মার্কেটিং করে অনেক মানুষের জানাতে হবে আপনার এই শোরুম টার বিষয়ে।তাই অবশ্যই দোকান দেওয়া হয়ে গেলে দোকানটির মার্কেটিং করে ফেলবেন।

 

লাভজনক শোরুম ব্যবসার আইডিয়া

আপনারা চাইলে এই তিন ভাবে শোরুম ব্যবসা শুরু করতে পারেন। বর্তমান সময়ে লাভজনক এবং জনপ্রিয় শোরুম ব্যবসার মধ্যে এই ব্যবসা গুলি অন্যতম।

 

কাপড়ের শোরুম ব্যবসা

যত ব্যবসা রয়েছে তাদের মধ্যে কাপড়ের শোরুম ব্যবসাটি বর্তমানে খুবই লাভজনক একটি ব্যবসা। তাই আপনি এই সুযোগটাকে কাজে লাগিয়ে ভালো একটি স্থানে বা ভালো একটি মার্কেটে একটি ভালো কাপড়ের শোরুমের দোকান দিতে পারেন।

 

কাপড়ের শোরুম ব্যবসা দেওয়ার আগে আপনাকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সম্পর্কে খেয়াল রাখতে হবে

★আপনাকে ভালো একটি স্থান দেখে দোকান দিতে হবে যেখানে অনেক মানুষ চলাচল করে থাকে

 

★আপনি ব্যবসাটি কত মূলধন খাটিয়ে করবেন তার উপর নির্ভর করে আপনি দোকানটি সেই পরিসরের দিতে পারেন।

 

★আপনি যদি দোকান ভাড়া নিয়ে এই কাপড়ের শোরুম ব্যবসা করে থাকেন তাহলে অবশ্যই মালিকের সাথে সব চুক্তিপত্র ভালোভাবে করে নিবেন।

 

★শোরুম নির্বাচন হয়ে গেলে শোরুম দোকানটি সুন্দর করে ডেকোরেশন করে নিন এবং এর জন্য একটি ভালো নাম নির্বাচন করে নিন।

 

★আপনার কাপড়ে শোরুমে কি ধরনের পোশাক বিক্রি করবেন সেটা আগে থাকতেই ভেবে নিন কেননা এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ শোরুম ব্যবসার ক্ষেত্রে।

 

★আপনি সরাসরি পোশাক পাইকারি দামে গার্মেন্টস থেকে সংগ্রহ করে নিয়ে আসতে পারে অথবা বিদেশি পোশাকগুলো অর্ডার দেওয়ার মাধ্যমে আপনার দোকানে এনে শোরুমে বিক্রি করতে পারেন।

 

মোবাইলের শোরুম ব্যবসা

বর্তমানে মোবাইলের শোরুম এর ব্যবসাটি আরো একটি লাভজনক ব্যবসা। আপনারা এই ব্যবসাটি করার মাধ্যমে খুব সহজেই ভাল টাকা লাভ করতে পারবেন।আপনি যদি সঠিকভাবে মোবাইল ফোনের এই ব্যবসাটি চালাতে পারেন তাহলে আপনি এখান থেকে প্রতিমাসে ভালো একটি অর্থ লাভ করে নিতে পারবেন।

 

মোবাইল শোরুম ব্যবসা করার আগে করণীয়

★মোবাইল শোরুম ব্যবসা শুরু করার আগে আপনাকে সবার আগে ট্রেড লাইসেন্স করতে হবে।

 

★তারপরে আপনাকে ভালো একটি স্থান নির্বাচন করে দোকান দিতে হবে যদি মার্কেটে দোকান দিতে পারেন তাহলে আপনার জন্য খুবি ভাল হয়।

 

★দোকান দেওয়ার স্থান নির্বাচন হয়ে গেলেও দোকান ঠিক হয়ে গেলে দোকানটির সুন্দর করে ডেকোরেশন করে ফেলুন।

 

★আপনি চাইলেই স্মার্টফোন এবং বাটন ফোনের দোকান দুটি দিতে পারেন।

 

বাইকের শোরুম ব্যবসা

আমাদের দেশে বাইকের চাহিদা কি পরিমান তা তো আপনারা সকলেই জানেন। বাইকের চাহিদা তো দিন দিন আরও অনেক বেড়ে চলেছে।

 

বাইক অনেকে শখ করে কিনে থাকে। যার ফলশ্রুতিতে প্রতিবছরই আমাদের দেশে বাইকের চাহিদা বৃদ্ধি পেয়ে চলেছে। তাই আপনি চাইলে খুব সহজেই যেকোন বাইক কোম্পানির ডিলারশিপ নিয়ে বাইকের শোরুম দেয়ার মাধ্যমে এই ব্যবসাটি শুরু করতে পারেন।

 

বাইকের ডিলারশিপ ব্যবসা শুরু করার জন্য যা যা প্রয়োজন  

ডিলারশিপ ব্যবসা আবার তিন ধরনের হয়ে থাকে। যেমনঃ

★অথরাইজড ডিলার শিপ

★সাব ডিলারশিপ

★মাল্টি ব্র্যান্ড ডিলারশিপ

 

অথরাইজড ডিলার শিপ

সাধারনত এই ডিলারশিপ ব্যবসা কি প্রতিতি শহরের মেইন কেন্দ্রবিন্দুতে দেওয়া হয়ে থাকে।এরা সাধারণত সরাসরি কোম্পানির সাথে লিংক করে ব্যবসা করে থাকে। অর্থাৎ কোম্পানি থেকে বাইক তৈরি হওয়ার পরপরই সরাসরি সেটি শোরুমে চলে আসে এবং সেখান থেকে শোরুম মালিকরা এটা বিক্রি করে থাকে।

 

সাব ডিলারশিপ ব্যবসা

এই ডিলারশিপ ব্যবসা এটি মূলত কোম্পানির স্বীকৃত একটি ডিলারশিপ ব্যবসা। কিন্তু এই ডিলারশিপ ব্যবসা এটি অথরাইজড ডিলার শিপ এর আওতায় কাজ করে থাকে। আপনার প্রচুর পরিমাণ যদি অনেক কম থাকে তাহলে আপনি অথরাইজড ডিলারশিপ নিতে পারবেন না তখন আপনি চাইলে সাব ডিলারশিপ নিতে পারবেন।


মাল্টি ব্র্যান্ড ডিলারশিপ

আপনি চাইলে এই ধরনের শোরুম থেকে বিভিন্ন ধরনের বাইক বিক্রি করতে পারবেন। তবে অবশ্যই এক্ষেত্রেও আপনাকে সাব ডিলারশিপ নিতে হবে। কেননা আপনি যখন কোন কোম্পানির অথরাইজড ডিলার শিপ নিবেন তখন অন্য কোন কোম্পানির অথরাইজড ডিলার শিপ আপনি দিতে পারবেন না।

 

শোরুম ব্যবসায় লাভ কেমন

বর্তমানে যত জনপ্রিয় এবং সহজ লাভজনক ব্যবসা রয়েছে তাদের মধ্যে শোরুম ব্যবসাটি কিন্তু খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আপনারা চাইলে এই ব্যবসা টির মাধ্যমে খুব সহজেই ভালো টাকা লাভ করতে পারবেন।

 

আপনাকে এই ক্ষেত্রে এই ব্যবসাটি সঠিকভাবে পরিচালনা করতে হবে তাহলে আপনি এখান থেকে ভালো কিছু আশা করতে পারবেন।

 

আমাদের দেশে এমন অনেক শোরুম ব্যবসায়ী রয়েছে যারা প্রতিমাসে এর শোরুম ব্যবসার মাধ্যমে বিনা পরিশ্রমে লাখ লাখ টাকা এখান থেকে লাভ করে চলেছে। তাই আপনি চাইলে সঠিকভাবে যদি এই ব্যবসাটি করতে পারেন আপনিও এ ব্যবসার মাধ্যমে লাভ করতে পারবেন।

 

আমাদের শেষ কথা

আমি আপনাদেরকে আজকের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে জনপ্রিয় কয়েকটি শোরুম ব্যবসা আইডিয়া সম্পর্কে বললাম। তাছাড়া আরও অনেক ধরনের শোরুম ব্যবসা রয়েছে আপনারা চাইলে সে ব্যবসা গুলো করতে পারেন। তবে এই ব্যবসা গুলো করার মাধ্যমে আপনারা অনেক সহজেই ভালো টাকা এখান থেকে লাভ করে নিতে পারবেন।

 

আরো দেখুন

 রাখি মালের ব্যবসা শুরু করার নিয়ম

 হরেক মালের ব্যবসা শুরু করার নিয়ম

 ডিলারশিপ ব্যবসা শুরু করার নিয়ম  

Akash

প্রযুক্তির খবর, শিক্ষা ও ইন্সুরেন্স, ভিসার খবর, স্বাস্থ্য টিপস ও অনলাইনে আয় সম্পর্কিত তথ্যের বিরাট একটি প্ল্যাটফর্ম।

Post a Comment (0)
Previous Post Next Post