ইনজেকশন দেওয়ার নিয়ম

ইনজেকশন দেওয়ার নিয়ম


ইনজেকশন দেওয়ার নিয়ম কি বা কেনই বা ইনজেকশন দেওয়ার প্রয়োজন হয়? এই প্রশ্নগুলোর উত্তর কি আমরা জানি? আমাদের শরীরে বিভিন্ন ধরণের রোগ হয়ে থাকে। আর এই জন্য আমরা বিভিন্ন ঔষুধ গ্রহণ করে থাকি। কিন্তু অনেক সময় ঔষুধ সরাসরি গ্রহণের পরিবর্তে লিকুইড আকারে গ্রহণের প্রয়োজন হয় শিরার মধ্য দিয়ে।



ইনজেকশন হলো একটি বলস বা এককালীন ডোজ হিসেবে শরীরে প্রয়োগ করার জন্য এক প্রকার ঔষুধ। ইনজেকশনের আরেক নাম শট, এটি একটি তরল ঔষুধ, তরল বা পুষ্টি যা সরাসরি একজন ব্যক্তির শরীরে সরবরাহ করা হয়। একজন অসুস্থ ব্যক্তির শিরা পেশী, ত্বক বা হাড়ে ভ্যাকসিন এবং অন্যান্য ধরণের ঔষুধ প্রয়োগের জন্য ইনজেকশন ব্যবহার করা হয়। তাই আজকের এই পোস্টে ইনজেকশন দেওয়ার নিয়ম নিয়ে থাকছে এর আন্দ্যোপান্ত।



ইনজেকশন কিভাবে দিতে হয়



ডায়াবেটিস রোগী ও অন্যান্য প্রয়োজনে রোগীকে অবশ্যই ইনজেকশন দিতে হয়। কিন্তু এই ইনজেকশন দেওয়ার সঠিক নিয়ম না জানলে তা ক্ষতির কারণ হতে পারে। তাই আপনার জাকিভাবে দিতে হয় না উচিত ইনজেকশন দেওয়ার নিয়ম কি সম্পর্কে। কিভাবে ইনজেকশন সঠিকভাবে শিরা খুঁজে দিতে হয় বা ইনজেকশন দেওয়ার নিয়ম কি চলুন তা দেখে নেই।



ইনজেকশনকে সম্পূর্ণরূপে বাতাস মুক্ত করাঃ ইনজেকশনের ভিতরে ঔষুধ ঢোকানোর পর কোন প্রকার বাতান থাকতে পারবে না সিরিঞ্জে। সিরিঞ্জকে সম্পূর্ণরূপে বাতাস মুক্ত করতে তাই ঔষুধ ইনজেকশনে ঢোকানোর পর কিছু ঔষুধ নিডলে প্রেস করে বের করে দিতে হবে। তাহলে আর বিন্দু পরিমাণও বাতাস থাকবে না সিরিঞ্জে।



ত্বকের নিচে স্বাস্থ্যকর ফ্যাটি স্তরে ইনজেকশন করুনঃ ইনজেকশনের মাধ্যমে দেওয়া তরলটি সঠিকভাবে কাজ করার জন্য, পেশী বাদে ত্বকের নিচের ফ্যাটি স্তরে ইনজেকশন দিতে হবে। প্রতিটি ইনজেকশনের জন্য একটি নতুন জায়াগা নির্ধারণ করতে হবে। একই জায়গায় বারবার ইনজেকশন দেয়া অনুচিত। যদি শরীরের এমন জায়গায় ইনজেকশন দেওয়া হয় যা পুরু না তাহলে ঔষুধটি যেভাবে কাজ করার কথা ছিল সেভাবে কাজ করবে না।



৪ মিমি পেন সূঁচ (৯০ ডিগ্রিতে ঢোকানো সকল ধরণের প্রাপ্ত বয়স্ক এবং শিশুদের জন্য): বয়স, লিঙ্গ, জাতি এবং শরীরের ওজনভেদে সকলকেই একটি 4 মিমি কলমের সুই প্রাপ্ত বয়স্ক এবং শিশুদের জন্য উপযুক্ত বলে বিবেচিত হয়। এর কারণ একটি 4 মিমি কলমের সূচ ত্বকের মধ্য দিয়ে যাওয়ার জন্য যথেষ্ট ছোট এবং পেশীতে ঢোকানো হলে তার ঝুঁকিও কম থাকে।



পেট, উরু এবং নিতম্বের অংশে ডায়াবেটিসের ঔষুধ ইনজেকশন করুন:ইনজেকশনের জায়গা এবং ত্বকের টিস্যু সুস্থ রাখতে সাহায্য করার জন্য ইনজেকশন প্রয়োগের জায়গাগুলো সঠিকভাবে ম্যাসেজ করতে হবে। ইনজেকশনের জায়গা বা সাইটগুলি শরীরের এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় পরিবর্তন করা যেতে পারে তবে পেট, উরু এবং নিতম্ব বিশেষভাবে ডায়াবেটিসের ঔষুধ শোষণ করতে পারে তাই এখানে প্রয়োগ করাটা ভালো।



তিন ধরণের ইনজেকশ রয়েছে রয়েছে এগুলো হলো:

  • IM (Interamuscular)

  • IV (Intravenous therapy)

  •  ID (Intedermal Injeciton)



IM ইন্ট্রারমাসকুলার (Interamuscular) যা হাতের পেশীতে এই  ইনজেকশন দেওয়া হয়। এই ইনজেকশন দেওয়ার নিয়ম হলো:


  • বাম হাতের উপর থেকে তিন আঙ্গুল নিচে (ক্যাভিকল হাড়ের জয়েন্ট থেকে) ইন্ট্রামসকুলার ইনজেকশন পুশ করতে হবে।

  • ৯০ ডিগ্রি এঙ্গেলে ইনজেকশন দিতে হবে (সরাসরি লম্বালম্বি অবস্থায়)। খেয়াল রাখতে হবে ইনজেকশন যেন অন্য কোন দিকে বেঁকে না যায়।

  • নিডল ঢুকালে একটু টেনে দেখতে হবে যে রক্ত বের হয় কিন। যদি রক্ত বের হয় তাহলে তা বের করে ফেলতে হবে আর যদি রক্ত না বের হয় তাহলে আস্তে আস্তে ইনজেকশন পুশ করে ছেড়ে দিতে হবে।


সাবধানতা: ইনজেকশন দেওয়ার আগে অবশ্যই গ্লাবস পড়ে নিবেন আর না পড়লে হেক্সাসল দিয়ে ইনজেকশনের জায়গাটি পরিষ্কার করে নিন।



IV ইন্ট্রাভেনাস থেরাপি (Intravenous therapy) হাতে ক্যানুলার মাধ্যমে সরাসরি শিরাতে যে ইনজেকশন পুশ করা হয়। প্রাপ্ত  বয়স্কদের ক্ষেত্রে IV ইনজেকশন সাধারণত হাতের বাহু এবং বাইরের পৃষ্ঠে দেওয়া হয়ে থাকে। জরুরী পরিস্থিতিতে অন্যান্য জায়গাও ব্যবহার করা যেতে পারে। ইন্ট্রাভেনাস ইনজেকশন দেওয়ার নিয়ম হলো:


  • ইন্ট্রাবেনাস থেরাপি দেওয়ার জন্য আপনার প্রথমে একটি বাটারফ্লাই সেটের প্রয়োজন হবে।

  • বাটারফ্লাই সেটের একপাশে নিডল থাকবে আরেকপাশে ইনজেকশন সেট করতে হবে।

  • ইনজেকশন সেট করার পর কিছু ঔষুধ বের করে ফেলতে হবে যাতে কোন প্রকার বাতাস না থাকে। 

  • হাতের বাইরের পৃষ্ঠে একটু বেঁধে নিতে হবে এটিকে বলে টনিক ওয়েট, যেন শিরাটি ফুলে উঠে আর সুন্দরভাবে ইনজেকশন পুশ করা যায়।

  • তারপর ইনজেকশন পুশ করার জায়গাটি পরিষ্কার করে নিতে হবে তুলা দিয়ে ভালো করে।

  • এবার ইনজেকশনের নিডলটি খুলতে হবে। এর দুইটি দিক থাকে একটি ছিদ্রযুক্ত আরেকটি ছিদ্র ছাড়া। ছিদ্রযুক্ত দিকটি উপরের দিকে রাখতে হবে নাহলে ঔষুধ ভিতরে যাবে না।

  • এবার সরাসির সূঁচটি হাতটি কিছুটা শক্ত করে টান দিয়ে ধরে সোজাসেুজি ইনজেকশন পুশ করতে হবে। খেয়াল রাখবেন যেন শিরা ছিদ্র না হয় এবং ইনজেকশন পুরোপুরি ভিতরে ঢুকে যায়।


ID ইন্ট্রাডারমাল ইনজেকশন (Intedermal Injeciton) চামড়ার নিচে যে ইনজেকশন দেওয়া হয়। কিছু কিছু ইনজেকশন চামড়ার নিচে দিতে হয় বিশেষ করে মোটা জায়গাগুলোতে যেখানে চামড়া ধরা বেশ সহজ। এই ইনজেকশনগুলি নিতম্ব, পেটের নিচে ও অন্যান্য চামড়ার নিচে দেয়া হয়। ইন্ট্রাডারমাল ইনজেকশন দেওয়ার নিয়ম হলো:


  • IM ও IV ইনজেকশনের মতো করেই প্রাথমিক কাজগুলো করে নিন (যেমন: নিডল থেকে বাতাস বের করা, ইনজেকশনের জায়গা পরিষ্কার করা, হাতে গ্লাবস পড়া, সাথে তুলা রাখা।)

  • এবার পেটের বা নিতম্বের মোটা চামড়া টেনে ধরুন, দেখবেন চামড়া মাংস ছাড়া উঠে এসেছে। এবার এই অংশে ইনজেকশন পুশ করে দিবেন। 

  • তারপর চামড়া ছেড়ে দিয়ে তা তুলো দিয়ে হালকা ম্যাসেজ করে নিন।





ইনজেকশন কোথায় দিতে হয় 



ধমনী হৃৎপিন্ড থেকে রক্ত বহন করে এবং শিরা হৃৎপিন্ডের দিকে রক্ত বহন করে। পালমোনারি রক্তনালী ব্যতীত, ধমনী অক্সিজেনযুক্ত রক্ত ​​বহন করে এবং শিরাগুলি ডিঅক্সিজেনেটেডযুক্ত রক্ত ​​বহন করে। ধমনীতে পেশী টিস্যু সহ পুরু দেয়াল রয়েছে। কিন্তু শিরায় পাতলা দেয়াল রয়েছে এবং রক্ত ​​প্রবাহ স্বাভাবিক রাখতে এটি ভালভ ব্যবহার করে। ইনজেকশন সাধারণত শিরাতে দিতে হয়। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে শিরাতেই কেন ইনজেকশন দিতে হয়?


উচ্চ চাপে ধমনীর মাধ্যমে অক্সিজেনযুক্ত রক্তের তুলনায় শিরায় রক্ত ​​অপেক্ষাকৃত কম চাপে প্রবাহিত হয়। তাই ধমনীতে যদি সুচ দিয়ে ছিদ্র করা হয় তাহলে প্রচুর রক্তক্ষরণ হবে। তাই প্রধানত ইনজেকশনগুলি ধমনীর পরিবর্তে শিরার মাধ্যমে প্রয়োগ করা হয়। শিরায় পাতলা দেয়াল থাকার কারণে তা ছিদ্র করা বেশ সহজ এবং এটি ছিদ্র হলেও তা থেকে ধমনীর তুলনায় অনেক কম রক্ত বের হয় এবং তা দ্রুত বন্ধ করা সহজ। কিন্তু ধমনীর ক্ষেত্রে তা সম্ভব হয়, তাই ধমনীর পরিবর্তে শিরাতে ইনজেকশন দেয়া হয়।



রক্তের হিমোগ্লোবিন বৃদ্ধির ইনজেকশন 



ফুসফুস থেকে টিস্যুতে রক্তে অক্সিজেন স্থানান্তরের জন্য হিমোগ্লোবিন অপরিহার্য। তাই এই হিমোগ্লোবিনের অভাব দেখা দিলে অক্সিজেন পরিবহনে সমস্যা তৈরি হবে ফলে রোগী অসুস্থ হয়ে পড়বে। তাই যাদের হিমোগ্লোবিন প্রাকৃতিক উপায়ে তৈরি হয় না তাদের জন্য রক্তের হিমোগ্লোবিন বৃদ্ধির ইনজেকশন পুশ করা যেতে পারে। 


HB-IV Injection মানবদেহে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যবহৃত হয়। এটি সাধারণত যেসব রোগীদের আয়রন ডেফিসিয়েন্সি অ্যানিমিয়া বা আয়রনের ঘাটতি আছে তাদের দেওয়া হয়। হিমোগ্লোবিনের মাত্রা স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত ডাক্তার এই ঔষুধটি ব্যবহার করার পরামর্শ দিতে পারেন।



রোজা অবস্থায় ইনজেকশন দেওয়া যাবে কি

 

যাদের রোজার সমসয় ইনজেকশন নেওয়ার প্রয়োজন পড়ে বিশেষ করে যাদের সমসয়মতো ডায়াবেটিসের ইনজেকশন নিতে হয় তাদের জন্য এটি চিন্তার বিষয় যে রোজা অবস্থায় ইনজেকশন দেওয়ার নিয়ম কি বা দেওয়া যাবে কিনা? এক কথায় এর উত্তর হচ্ছে হ্যাঁ, রোজা অবস্থায় ইনজেকশন দেওয়া যাবে এতে কোন সমস্যা নেই।


রোজাদারের জন্য রমজান মাসে দিনের বেলায় ইনজেকশনের মাধ্যমে ঔষুধ খাওয়া জায়েজ আছে, সেটা ইনট্রামাসকুলার হোক বা ইন্ট্রাভেনাস।


তবে রোজাদারের জন্য রমজানে দিনের বেলায় পুষ্টি বা দুর্বলতা দূর করার উদ্দেশ্যে ইনজেকশন দেওয়া জায়েজ নয়। কারণ এটি খাওয়া-দাওয়ার বিধানের আওতায় চলে আসে। আর যদি এই ইনজেকশন দেওয়ার প্রয়োজন হয়ে দাঁড়ায় তাহলে রোজা ভাঙ্গতে হবে। তাই যাদের ইনজেকশন দেওয়া প্রয়োজন তারা রোজা খোলার পর যদি রাতে ইন্ট্রামাসকুলার বা শিরায় ইনজেকশন দেওয়া যায়, সেটাই উত্তম হবে।



ইনজেকশন নিলে রোজা ভাঙবে কিনা


না, রোজা অবস্থায় ইনজেকশন নিলে রোজা ভাঙ্গবে না। রমজান মাসে ইনজেকশনের মাধ্যমে ঔষুধ গ্রহণ জায়েজ আছে কিন্তু যদি পুষ্টি বা দুর্বলতা দূর করার উদ্দেশ্যে হয় তাহলে তা গ্রহণ জায়েজ হবে না। এক্ষেত্রে রোজা থাকলে তা ভেঙ্গে যাবে।



অন্য পোস্টঃমাত্র ৭ দিনে ওজন কমানোর উপায়


কোমর ব্যথার ইনজেকশন



কোমর ব্যথার ইনজেকশন দেওয়ার নিয়ম কি, এখন এটা নিয়ে কথা বলবো। যখন পিঠ এবং কোমরের ব্যথা দূর হয় না এবং সময়ের সাথে সাথে এটি বাড়তে থাকে আর কোন প্রকার ঔষুধেও কাজ হয় না তখন প্রাথমিকভাবে ডাক্তার আপনাকে বিভিন্ন শারীরিক থেরাপি বা ব্যায়ামের নির্দেশ দেন কিন্তু মাত্রাতিরিক্ত অবস্থায় পৌঁছে গেলে ইনজেকশন নেওয়া যেতে পারে। কোমর ব্যথার ইনজেকশন আপনার পিঠের ব্যথা এবং প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। এই ইনজেকশনে একটি স্টেরয়েড এবং একটি অবশ হওয়ার ঔষুধ থাকে।


স্নায়ুর প্রদাহ বা ক্ষতি, সাধারণত ঘাড় বা পিঠের নিচে হয়ে থাকে যাকে ডাক্তাররা “রেডিকুলোপ্যাথি” বলে থাকেন। স্নায়ু মেরুদণ্ডের যেখান থেকে বের হয়ে যায় সেখানেই সমস্যার উৎপত্তি হয়। রেডিকুলোপ্যাথিতে, তীক্ষ্ণ ব্যাথা পিঠের নীচের অংশ থেকে এক বা উভয় পায়ে বা ঘাড় থেকে বাহুতে প্রবেশ করে। এটি এক প্রকার হার্নিয়েটেড ডিস্ক রেডিকুলোপ্যাথি হতে পারে।


আপনি ক্ষতিগ্রস্ত স্নায়ুর চারপাশে ইনজেকশন নিতে পারেন। বাজারে কোমরের ব্যথা দূর করার জন্য বিভিন্ন ধরণের ইনজেকশন রয়েছে এর মধ্যে আছে:


  • এপিডুরাল

  • নার্ভ ব্লক

  • ডিসকোগ্রাফি


উল্লেখ্য: কোমরে ব্যথার জন্য ইনজেকশন দেওয়ার পর সাইড ইফেক্ট হিসেবে কিছুটা ব্যথা হতে পারে পাশাপাশি মাথাব্যথা, বমি বমি ভাব এবং বমিও হতে পারে।



ইঞ্জেকশন দেওয়ার পর ফুলে যায় কেন 



ইনজেকশন দেওয়ার পর এর প্রতিক্রিয়া হিসেবে ক্ষতস্থান ফুলে যাওয়া সবচেয়ে সাধারণ একটি ঘটনা। এর মধ্যে আরো রয়েছে চারপাশে ব্যথা, চুলকানি, ফোলাভাব বা লালভাব। এই প্রতিক্রিয়াগুলি সাধারণত হালকা ধরণের হয় যা 1-2 দিন স্থায়ী হয়ে থাকে।


কিন্তু ইনজেকশন দেওয়ার পর ফুলে যাওয়ার কারণ কি? এর সবচেয়ে সাধারণ কারণ হলে সুই বা ঔষুধের প্রতি ত্বকের প্রতিক্রিয়া। আরেকটি কারণ রয়েছে অ্যালাজিৃর প্রতিক্রিয়া। অতিরিক্ত প্রতিক্রিয়া তখন হবে যখন আপনার ত্বকের অ্যালার্জির মতো সমস্যা থাকবে।



পাছায় ইনজেকশন দেওয়ার নিয়ম

 


চামড়ার নিচে ইনজেকশন দেওয়াকে IM বা ইন্ট্রারমাসকুলার (Interamuscular) ইনজেকশন বলে। এই ইনজেকশন শরীরের মাংসশল স্থানের চামড়ার নিচে দেওয়া হয়। এর মধ্যে পাছা বা নিতম্বও রয়েছে। নিতম্বের নিচে কিভাবে ইনজেকশন দিতে হবে তা আমি উপরে বিস্তারিত কথা বলেছি IM ইন্ট্রারমাসকুলার (Interamuscular) ইনজেকশন দেওয়ার নিয়ম এর জায়গায়, ঐখান থেকে আপনি বিস্তারিত জেনে নিতে পারবেন।



টিটেনাস ইনজেকশন দেওয়ার নিয়ম



ডিপথেরিয়া, টিটেনাস এবং পের্টুসিস ভ্যাকসিন (DT, DTaP, Td এবং Tdap) যা ইন্ট্রারমাসকুলার ইনজেকশন যেভাবে দেওয়া হয় সেই পদ্ধতি অনুসরণ করা হয় এক্ষেত্রে। তাই উপরে উল্লেখিত ইন্ট্রারমাসকুলার ইনজেকশন পদ্ধতি দেখলেই আপনি বুঝতে পারবে কিভাবে এই ইনজেকশন প্রয়োগ করতে হয়।


টিটেনাস ইনজেকশন ছোট বাচ্চা বা নবজাতকের জন্য উরুর ভাস্টাস ল্যাটারালিস পেশীতে দিতে হয়। বড় শিশু এবং প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে উপরের বাহুতে ডেল্টয়েড পেশীতে দিতে হয়। 



খালি ইনজেকশন পুশ করলে কি হয় 



যে কোনো শিরার মাধ্যমে রক্তের প্রবাহে প্রবেশ করা বাতাস হৃৎপিণ্ডের ডানদিকে প্রবেশ করে এবং শেষ পর্যন্ত ফুসফুসের ধমনীর মাধ্যমে ফুসফুসে গিয়ে পৌঁছায়। এটি এয়ার এমবোলিজম এর একটি সম্ভাব্য গুরুতর অবস্থা যা হঠাৎ মৃত্যুর কারণ পর্যন্ত হতে পারে। কিন্তু সবসময় তা হয় না; কিছু কিছু ক্ষেত্রে বাতাস ফুসফুসের একটি সেগমেন্টাল ধমনীতে প্রবেশ করতে পারে যার ফলে সেই অংশটির পতন ঘটে যা সেই অংশের অ্যালভিওলিকে ক্ষতিগ্রস্ত করে এবং কিছু জটিলতা হলেও, কিন্তু মৃত্যু হয় না এই ক্ষেত্রে বাতাস ধীরে ধীরে শোষিত হয়। তাই খালি ইনজেকশন পুশ করলে সেটা আপনার মৃত্যুর কারণ পর্যন্ত হতে পারে। তাই এই ধরনের কার্যকলাপ থেকে বিরত থাকা উচিত সচেতনভাবে।



সোমাজেক্ট  ইনজেকশন দেওয়ার পদ্ধতি



টিটেনাস, নিতম্বে ইনজেকশন দেওয়ার মতো সোমাজেক্ট ইনজেকশনও ইন্ট্রারমাসকুলার ইনজেকশনের পদ্ধতিতে দেওয়া হয়ে থাকে। উপরে আমি কিভাবে ইন্ট্রারমাসকুলার ইনজেকশন প্রয়োগ করতে হয় তা সম্পর্কে ধারাবিক আলোচনা করেছে ইনজেকশন দেওয়ার নিয়ম হেডিংয়ে। 



গরুকে ইনজেকশন দেওয়ার নিয়ম

 


সকল বয়সের পশুর জন্য একই রকম ইনজেকশন দেওয়ার নিয়ম। কিন্তু শরীরের কোন জায়গায় কিভাবে ও কোনটা দিবেন ইনজেকশন তা নির্ভর করবে প্রয়োজন অনুসারে। গরুর ক্ষেত্রে ঘাড়ের পেশীতে ইন্ট্রামাসকুলার ইনজেকশন দেওয়া হয়। কিন্তু গরুর পিছনের পায়ে বা রাম্পের উপরে ইন্ট্রারমাসকুলা ইনজেকশন দেবেন না। কাঁধের সামনে সাবকুটেনিয়াস ইনজেকশন দেওয়া উচিত।


  • গরুর পেশীর গভীরে IM ইনজেকশন দিতে হয়। 

  • ত্বক, ত্বকের নিচের টিস্যু এবং চর্বি পেশীতে পৌঁছানোর জন্য যথেষ্ট লম্বা সুই ব্যবহার করুন। 

  • সুইটি ত্বকের পৃষ্ঠের লম্বভাবে ত্বকে প্রবেশ করানো উচিত। 

  • পশুর পেশীতে সুই ঢোকান, এবং তারপর সুচের সাথে সিরিঞ্জ সংযুক্ত করুন।

  • তারপর আস্তে আস্তে পুশ করুন ইনজেকশন পশুর শরীরে।



ইনজেকশন দেওয়ার নিয়ম শেষকথা



ইনজেকশন দেওয়ার নিয়ম কি? ইনজেকশন দিতে দেখলে অনেকেরই ভয় লাগে কিন্তু প্রয়োজনের সময় তো এটি দিতেই হয়। আবার অনেককেই নিয়মিত ডায়াবেটিসের ইনজেকশন দিতে হয় আর প্রতিদিন নার্সের কাছে যাওয়া, টাকা দেওয়া সময় ও ব্যয় সাপেক্ষ। তাই অনেকে চান যেন নিজে শিখে নিতে পারেন ইনজেকশন দেওয়াটা। তাই আমাদের আজকের আয়োজনে আমি আপনাদের সাথে ইনজেকশন দেওয়ার নিয়ম কি এবং কিভাবে দিবেন নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। তাই সর্বশেষ একটা কথাই বলবো ইনজেকশন দেওয়ার নিয়ম নিয়ে যদি আরো কোন প্রশ্ন থাকে আপনাদের তাহলে কমেন্টের মাধ্যমে জানাতে পারেন। ধন্যবাদ আজ এই পর্যন্তই।


Akash

প্রযুক্তির খবর, শিক্ষা ও ইন্সুরেন্স, ভিসার খবর, স্বাস্থ্য টিপস ও অনলাইনে আয় সম্পর্কিত তথ্যের বিরাট একটি প্ল্যাটফর্ম।

Post a Comment (0)
Previous Post Next Post