জুতার ব্যবসা আইডিয়া (A-Z গাইডলাইন)

জুতার ব্যবসা আইডিয়া (A-Z গাইডলাইন)


জুতার ব্যবসা (Shoe business: বাজারে ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন ধরনের ব্যবসা পরিচালনা করে থাকেন। বিভিন্ন দিক বিবেচনা করে একজন ব্যবসায়ী একটি কাঙ্খিত ব্যবসাটি আরম্ভ করে থাকে।

এসব বিবেচনায় পর্যায়ে একটি হচ্ছে বর্তমানে কোন ব্যবসা সবচেয়ে লাভজনক সেটি খুঁজে বের করে ব্যবসায় শুরু করা। একজন ব্যবসায়ী তার ব্যবসাটি শুরুর আগে অবশ্যই চিন্তা করে কোন ব্যবসায় লাভ বেশি এই বিষয়ে।

বিভিন্ন লাভজনক ব্যবসার তালিকায়, একটি হচ্ছে জুতার বিজনেস। আর তাই আপনি যদি একটি লাভজনক ব্যবসায়িক টপিক নিয়ে নিজের বিজনেস আরম্ভ করতে চাচ্ছেন, আপনার জন্য সবচেয়ে ভালো অপসন হবে জুতা বিক্রির ব্যবসাটি শুরু করা।

গ্রাহক চাহিদা, মার্কেট, লাভ সবকিছু বিবেচনা করে এটা বলা যায় বর্তমানে লাভজনক বিজনেস গুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে এটি।

আর তাই আজকের আর্টিকেলে আমরা জুতার বিজনেসের সম্পর্কে বিস্তারিত জানার চেষ্টা করবো। এই ব্যবসার কয়েকটি প্রক্রিয়া নিয়ে আমি আলোচনা করবো এই আর্টিকেলে।

জুতার ব্যবসা কেমন হয়?


এই ব্যবসাটি মূলত দুই ভাবে পরিচালিত হয়ে থেকে আমাদের দেশে। দুটির মধ্যে একটি হচ্ছে ব্র্যান্ড এর এবং অন্যটি হচ্ছে নন ব্র্যান্ড এর। বাজারে বিভিন্ন ব্র্যান্ড এর জুতা পাওয়া গিয়ে থাকে।

উল্লেখযোগ্য কয়েকটি জুতার ব্র্যান্ড হচ্ছে বাটা (Bata), Apex (অ্যাপেক্স), লোটো (Lotto) ইত্যাদি। জুতার বিভিন্ন কোম্পানি বা ব্র্যান্ড গুলোর মধ্যে অন্যতম জনপ্রিয় দুটি ব্র্যান্ড হচ্ছে বাটা এবং অ্যাপেক্স। এই দুটি ব্র্যান্ড এর জুতাগুলো বিভিন্ন জায়গায় বেশ ব্যবহার করা হয়ে থাকে।

অন্যদিকে নন ব্র্যান্ড পর্যায়ে বিভিন্ন ধরনের জুতা বিক্রি করা হয়। তবে এসব জুতাগুলো কোনো ব্র্যান্ড পর্যায়ে পড়ে না। গ্রাহক চাহিদার উপর ভিত্তি করে এসব জুতা বিক্রি করা হয়। এমনিতে বাজারের ষাট শতাংশ জুড়ে রয়েছে নন ব্র্যান্ড কোম্পানিগুলো।

দুই ধরনের প্রক্রিয়ায় আপনি আপনার বিজনেস পরিচালনা করতে পারেন। তবে গ্রাহক চাহিদার বিষয়টি মাথায় রেখেই এই ব্যবসার পণ্য যাচাই করা দরকার।

আপনি চাইলে ব্র্যান্ড, নন ব্র্যান্ড দুই ধরনের জুতা নিয়েও বিজনেস করতে পারেন।

কিন্তু এখানে চলে আসে আরো একটি বিষয়। ব্র্যান্ড, নন ব্র্যান্ড এর পরবর্তীতে চলে আসে ক্যাটাগরির বিষয়টি। অর্থাৎ বিভিন্ন ক্যাটাগরির জুতার ব্যবসা রয়েছে। এর মধ্যে কয়েকটি হলোঃ

বার্মিজ জুতার ব্যবসা

চামড়ার জুতার ব্যবসা

চাইনিজ জুতার ব্যবসা ইত্যাদি।

চামড়ার জুতার ব্যবসা


আমাদের দেশের অধিকাংশ মানুষই চামড়ার জুতা ব্যবহার করে থাকেন, এমনটা বললে নিশ্চই আমি ভুল হবেনা। তবে এর পেছনের বড় কারণ হচ্ছে কম মূল্য। অত্যন্ত সস্তায় চামড়ার জুতা পাওয়া গিয়ে থাকে। যারা কম দামের মধ্যে নিত্য ব্যবহার্য জুতা চান তারা বেশিরভাগ এই ধরনের জুতা ক্রয় করে থাকে। তাই চাহিদার কথা হিসাব করলে চামড়ার জুতার চাহিদা অনেক বলা যায়।

বার্মিজ জুতার ব্যবসা


বার্মিজ জুতা গুলোর ডিজাইন অনেক আধুনিক মানের হয়ে থাকে এবং এসব জুতা গুলো কাস্টমারদের বেশ পছন্দের। বাজারে অন্যান্য সব জুতার পাশাপাশি বার্মিজ জুতার বেশ চাহিদা রয়েছে। পণ্য ভেদে এসব জুতা জোড়া প্রতি ২০০, ৩০০, ৪০০ টাকা হয়ে থাকে। দামের পরিমান যত বেশি থাকে পণ্যের মানও ততটা ভালো থাকে সাথে ইউনিক ডিজাইন থাকে। আপনার স্থানের গ্রাহক চাহিদার কথা চিন্তা করে এই জুতা আপনার পণ্যের তালিকায় রাখতে পারেন।

চাইনিজ জুতার ব্যবসা


চাইনিজ জুতাগুলো ও বার্মিজ জুতার মত ভালো মনের হয়ে থাকে। বাজারে চাইনা জুতা নামেও এটি পরিচিতি। এসব জুতা বিভিন্ন ডিজাইনের হয়ে থাকে। আমাদের দেশে এসব জুতাগুলো কাস্টমারদের অনেক পছন্দের। আপনি চাইলে বিভিন্ন চাইনিজ ব্র্যান্ড এর জুতা নিয়ে বিজনেস করতে পারবেন। তবে পাশাপাশি বার্মিজ পণ্যও রাখতে পারেন।

ফুটপাতে জুতার ব্যবসা


বর্তমান সময়ে ফুটপাতে পরিচালিত ব্যবসাগুলো বেশ লাভজনক হয়ে উঠেছে বলা যায়। ফুটপাতের এমন একটি লাভজনক ব্যবসায় হচ্ছে জুতার ব্যবসা। আপনি শহরের ওলিতে গলিতে দেখবেন এই ব্যবসাটি পরিচালিত হচ্ছে।

যদি আপনি ছোট পরিসরে লাভজনক ব্যবসা আইডিয়া খুঁজছেন আপনার জন্য এটি সেরা অপসন প্রমাণিত হতে পারে। এমনিতে ফুটপাতে ব্যবসা করার ক্ষেত্রে আপনাকে কোনো প্রকার দোকান ভাড়া, অন্যান্য খরচ পোহাতে হবেনা।

যার ফলে এক ব্যবসাতে ক্ষতির থেকে লাভ বেশি। আর জুতা সকলের নিত্য ব্যবহার্য পণ্য, তাই এই ব্যবসাটি সবসময়ের মতই লাভজনক থাকবে।

লাভজনক বলার কারণ হচ্ছে, আমাদের দেশে অধিকাংশ মানুষ বেশি দামের জুতা ব্যবহার করেন না। বড় বড় মার্কেটগুলোতে দাম তুলনামূলক বেশি হওয়াতে সকলেই ফুটপাতের দোকানগুলো থেকে তাদের পছন্দের জুতা ক্রয় করে থাকে। তাই ফুটপাতে এই বিজনেস বেশ জমজমাট বলা চলে।

অন্যদিকে এই ব্যবসাটি করতে বেশি পুঁজির প্রয়োজন নেই, আপনার সামর্থ্য অনুযায়ী পুঁজি নিয়ে শুরু করতে পারবেন। তবে ফুটপাতে ব্যবসা করার ক্ষেত্রে প্রশাসনের বা জায়গা কতৃপক্ষের অনুমতি নেওয়া উচিত, যাতে পরবর্তীতে কোনো সমস্যার সৃষ্টি না হয়।

জুতার পাইকারি ব্যবসা


পাইকারি বিজনেস এর বিষয়ে আমরা অনেকেই অবগত। সরাসরি ম্যানুফ্যাকচারার বা মূল উৎপাদকের থেকে প্রোডাক্ট ক্রয় করে সেটিকে হোলসেল দামে খুচরা ব্যবসায়ীদের নিকট সেল করার প্রক্রিয়াকে পাইকারি ব্যবসা বলা হয়ে থাকে।

পাইকারি ব্যবসা়র বাজারে জুতার ব্যবসাটি একটি লাভজনক অপসন। কেবল ৩-৫ লাখ টাকার মধ্যেই জুতা বিয়ে পাইকারি ব্যবসা করতে পারবেন আপনি। আমাদের দেশের কয়েকটি পাইকারি জুতার বাজার হচ্ছে গুলিস্থান, ফুলবাড়িয়া, চকবাজার ইত্যাদি। পাইকারি বাজারের দিক দিকে এগুলো বিখ্যাত।

যদি আপনি পাইকারি জুতা বিক্রির ব্যবসা করতে চান তাহলে ঢাকা ট্রেড সেন্টার , জাকের সুপার মার্কেট, সিটি সুপার মার্কেট থেকে জুতা সংগ্রহ করতে পারেন। অন্য মার্কেট তুলনায় এখান থেকে অনেক কম দামে আপনারা জুতা কিনে নিতে পারবেন। অধিকাংশ বিক্রেতারা এখান থেকে জুতা ক্রয় করে থাকে পণ্যের মূল্য কম হওয়াতে।

অনলাইনে জুতার ব্যবসা


অনলাইনের মাধ্যমে এখন প্রায় সব ধরনের বিজনেস পরিচালনা করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে জুতার ব্যবসাও পিছিয়ে নেই। তবে অনলাইনে এই ব্যবসা করার ক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দিতে হবে।

কেননা গ্রাহকরা একবার জুতা অর্ডার করলে সেটি বড় বা ছোট হতে পারে পরবর্তীতে। এতে ব্যবসায়িক সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে। এর জন্য দক্ষতা অর্জন করে অনলাইনে এই বিজনেস স্থানান্তর করতে পারেন। তবে একদমই নতুন অবস্থায় অনলাইনে এই বিজনেস না করাটা ভালো।

জুতার ব্যবসায় লাভ কেমন?


সবশেষে প্রশ্ন আসতে পারে আমরা যে জুতার ব্যবসা করার প্ল্যান করছি, এই ব্যবসায় লাভের পরিমান কেমন হতে পারে। অর্থাৎ এই ব্যবসায় লাভ কেমন।

বলতে গেলে জুতার ব্যবসাটি অবশ্যই লাভজনক ব্যবসা। তবে এটি আপনার জন্য তখনই লাভজনক প্রমাণিত হবে যখন আপনি সঠিক নিয়ম এবং পরিকল্পনা করে এই ব্যবসাটি পরিচালনা করতে পারবেন।

আমাদের নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের তালিকায় জুতা একটি। আমরা যেখানেই বের হইনা কেন জুতার প্রয়োজন আবশ্যক আমাদের জন্য। তাহলে চিন্তা করুন দেশে কত জন মানুষ রয়েছে, যারা প্রত্যেকেই জুতা ব্যবহার করছেন।

এটি থেকেই বুঝতে করছেন জুতার ব্যবহার এখন যেমন রয়েছে ভবিষ্যতেও অবশ্যই থাকবে। একইসাথে বর্তমানে যেমন এর চাহিদা প্রচুর সময়ের সাথে সাথে চাহিদা আরো বাড়তে থাকবে।

এছাড়া একটা সময় মানুষ শুধুমাত্র নিজের পা এর সুরক্ষার ক্ষেত্রে বা প্রয়োজনে জুতা ব্যবহার করতো কিন্তু বর্তমান সময়ে জুতা ও এক প্রকারের ফ্যাশন হয়ে উঠেছে। মানুষ প্রতিনিয়ত একাধিক ডিজাইনের জুতা ক্রয় করছেন। আবার অনেকে নিজেদের নিত্যদিনের পোশাকের সাথে মিলিয়ে জুতা কিনে থাকেন। যার ফলে এই ব্যবসাটি লাভজনক হয়ে উঠেছে।

তবে শিশু থেকে ৫ বা ৬ বছরের বাচ্চাদের জুতা বেশি বিক্রি হয়ে থাকে। বেশি বয়সের মানুষের জুতাও অবশ্যই বিক্রি হয় তবে শিশুদের জুতার চাহিদা তুলনামূলক বেশি বলা যায়।

জুতার ব্যবসায় অধিক লাভ এবং ঝুঁকি এড়াতে সঠিক স্থান নির্বাচন করা অত্যন্ত জরুরি। লোক সমাগম বেশি এমন একটি জায়গা নির্বাচন করে এই বিজনেস পরিচালনা করতে পারলে লাভের পরিমান বেশি।

আমাদের শেষ কথা


বন্ধুরা আজকে আমরা জুতার ব্যবসা সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা নেওয়ার চেষ্টা করলাম।

পরিশেষে আপনাদের একটি কথা বলবো, যত লাভজনক ব্যবসায় টপিক আপনি বেছে নেন না কেন যদি আপনার পরিচালনা প্রক্রিয়া এবং পরিকল্পনা সঠিক না থাকে তবে আপনি সফল হতে পারবেন না সে বিজনেসে।

ব্যবসার জগতে পরিকল্পনা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। এমন না যে এই ব্যবসা করে আপনি সফল হবেন আবার এমনটাও না আপনি সফল হবেন না। শুধুমাত্র সকল ব্যবসায়িক পদ্ধতি অনুসরণ করে পরিকল্পনা মাফিক কাজ করুন তবে আপনি সফল হবেন।

আর্টিকেলটা ছিল এই পর্যন্ত, এই টপিকে কোনো প্রশ্ন থাকলে অবশ্যই মন্তব্য করে জানাবেন। শেষ করছি এই পর্যন্ত, আল্লাহ হাফেজ।

আরো দেখুন


সুপারির পাইকারি ব্যবসা করার নিয়ম  

 

Akash

প্রযুক্তির খবর, শিক্ষা ও ইন্সুরেন্স, ভিসার খবর, স্বাস্থ্য টিপস ও অনলাইনে আয় সম্পর্কিত তথ্যের বিরাট একটি প্ল্যাটফর্ম।

1 Comments

  1. Ha ha ha scammer. You are foul boy. Please make a good bod

    ReplyDelete
Post a Comment
Previous Post Next Post