প্রেসার কুকার ব্যবহারের নিয়ম।প্রেসার কুকারে কি কি রান্না করা যায়

প্রেসার কুকার ব্যবহারের নিয়ম।প্রেসার কুকারে কি কি রান্না করা যায়


বর্তমান সময়ে আমরা প্রেসার কুকারের সাথে অনেকেই পরিচিত। অনেকের বাড়িতে রান্নাবান্নার কাজে প্রেসার কুকার ব্যবহার করা হয়ে থাকে। প্রেসার কুকার ব্যবহার করে অনেকেই রান্নার কাজ নির্বিঘ্নে সম্পূর্ণ করে থাকেন।আজকের পোস্টে প্রেসার কুকার ব্যবহারের নিয়ম বা কিভাবে প্রেশার কুকারে রান্না করা যাই এই বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হবে।তাহলে চলুন দেরি না করে জেনে নেওয়া যাকঃ-



প্রেসার কুকার ব্যবহারের নিয়ম 


প্রেসার কুকার অনেকে অনেক ভাবে ব্যবহার করে থাকেন। অর্থাৎ প্রেসার কুকার এর মাধ্যমে ভিন্ন ভিন্ন সকল রেসিপি রান্না করা যায়। প্রেসার কুকার ব্যবহার করে আপনি নিজে না থেকেও রান্নার কাজ সম্পূর্ণ করতে পারবেন। বাজার থেকে যখন কেউ প্রেসার কুকার কিনে আনবেন সেটি সর্বপ্রথম আপনাকে সেট করতে হবে। প্রেসার কুকার টি সেট করা হয়ে গেলে তারপরে এখানে রান্নার কাজ শুরু করা যাবে। তাহলে সর্বপ্রথম প্রেসার কুকার সেট করার নিয়ম সম্পর্কে জেনে নিতে হবে। 


প্রেসার কুকার সেট করার নিয়ম 


প্রেসার কুকার সেট করার নিয়ম খুবই সহজ। প্রেসার কুকার কিনে আনার পর যে কেউ ইচ্ছে করলে অল্প সময়ের মধ্যেই নিজের প্রেসার কুকার টি সেট করে নিতে পারেন রান্নার জন্য। সাধারণত প্রেশার কুকার টি কিনে আনার পর অনেকটা এলোমেলো এবং খোলা অবস্থায় থাকে।প্রথমে প্রেসার কুকারের ঢাকনাটির উপরে প্রেসার রেগুলেটারটি সুন্দর করে বসাতে হবে।প্রেসার রেগুলেটরটি বসানো হয়ে গেলে প্রেসার কুকার এর বডির ভিতরে ঢাকনাটি ধীরে ধীরে ঢুকাতে হবে এবং আস্তে আস্তে নিচের দিকে চাপ দিয়ে সুন্দরভাবে লাগিয়ে ফেলতে হবে। এভাবে খুব সহজেই যেকোনো ব্যক্তি বাজার থেকে প্রেসার কুকারটি কিনে এনে সেট করে ফেলতে পারবেন। 



অন্য পোস্ট:ওজন মাপার মেশিন কোথায় পাওয়া যায়, ওজন মাপার মেশিনের দাম 

প্রেসার কুকারে রান্না তাড়াতাড়ি হয় কেন


প্রেসার কুকারে সাধারণত তাপ ও চাপ প্রয়োগ করার মাধ্যমে রান্নার কাজ খুবই দ্রুত সম্পন্ন হয়ে থাকে। সহজ ভাষায় বলতে গেলে আপনি যখন হাড়িতে বা কড়াইতে রান্না করে থাকেন সেখানে অতিরিক্ত তাপ থাকে কিন্তু চাপ থাকে না যার কারণে রান্না হতে অনেক দেরি হয়ে থাকে। আর প্রেশার কুকার এর ভেতরে থাকা খাবার যতক্ষণ পর্যন্ত সিদ্ধ না হবে ততক্ষণ পর্যন্ত এর ভিতরের চাপ সহনীয় পর্যায়ে থাকবে।পরবর্তীতে যখন চাপ অতিরিক্ত হয়ে যাবে তখন তাদের কারণে রান্নার দ্রুত সম্পূর্ণ হয়ে যাবে। কেননা প্রচন্ড তাপের কারণে ভিতরে থাকা পানি বাষ্পে পরিণত হয়ে যাবে। আর আমরা অনেকেই জানি তরল থেকে বাষ্পে গেলে আয়তন বৃদ্ধি পায় ও চাপ বেড়ে থাকে। আর এই কারণেই সাধারণত প্রেসার  কুকারে তাড়াতাড়ি রান্নার কাজ সম্পূর্ণ হয়ে থাকে। 



প্রেসার কুকারে কি কি রান্না করা যায়


প্রেসার কুকারে অনেক ধরনের খাবার রান্না করা যায়। তাই বাজার থেকে প্রেসার কুকার অনেক ধরনের রেসিপি প্রেসার কুকার ব্যবহার করেই তৈরি করতে পারবেন।প্রেসার কুকার ব্যবহার করে আপনারা কেক তৈরি করতে পারবেন, ডাল সিদ্ধ করতে পারবেন, ভাত রান্না করতে পারবেন,ইলিশ রান্না করতে পারবেন,বিস্কুট রুটি, বিরিয়ানি, ভাপা দই, চটপটি ও বুটের ডালের হালুয়া সহ আরো অনেক ধরনের রান্না প্রেসার কুকারের মাধ্যমে করা যায়। 



অন্য পোস্টঃরাইস কুকার ব্যবহারের সঠিক নিয়ম 

প্রেসার কুকারে ভাত রান্নার নিয়ম


প্রেসার কুকার ব্যবহার করেও ভাত রান্না করা যায়। যারা নতুন প্রেসার কুকার কিনে এনেছেন তাদের অবশ্যই প্রেসার কুকারে ভাত রান্না করার নিয়ম সম্পর্কে জেনে নিতে হবে। 


প্রথমে চাল ভালো করে ধুয়ে নিতে হবে এবং প্রেসার কুকারের সসপ্যানে রাখতে হবে। চালের অনুপাতের ১.২ শতাংশ জল দিতে হবে। অর্থাৎ আপনি যে পরিমাণ চাল নিবেন তার থেকে দ্বিগুণ পানি নিতে হবে। তারপরে প্রেসার কুকারের ভেতরে চাল ও পানি দিয়ে প্রেসার কুকারের ঢাকনা বন্ধ করে দিতে হবে। প্রেসার কুকারে তিনবার লম্বা সিটি বাজলেই ভাত রান্নার কাজ সম্পূর্ণ হয়ে যাবে। আর যাদের প্রেসার কুকারে লম্বা সিটি বাজে না ছোট ছোট ছিটি বাজে তাদেরকে ৬ বার সিটি বাজা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। এতে সাধারণত ৫ থেকে ১০ মিনিট পর্যন্ত সময় নিয়ে থাকে।ভাত সিদ্ধ হয়ে যাওয়ার ১৫ থেকে ২০ মিনিট পর ঢাকনা খুলে ভাত প্রেসার কুকার থেকে বাহির করতে হবে।



প্রেসার কুকারে মাংস রান্নার পদ্ধতি/প্রেসার কুকারে গরুর মাংস রান্না করার নিয়ম 


গরু ও খাসির মাংস রান্না করার জন্য প্রেসার কুকার ব্যবহার করা যেতে পারে। প্রেসার কুকারে চাইলে আপনারা দুই ভাবে মাংস রান্না করতে পারেন। প্রথম পদ্ধতি হলো মাংস প্রথমেই প্রেশার কুকারে সিদ্ধ করে চর্বির পানিটুকু ফেলে দিয়ে এতে মশলা মাখিয়ে রান্না করা।আর দ্বিতীয় যে পদ্ধতিটি রয়েছে সেটি হচ্ছে আগেই মসলা দিয়ে মাংস কষিয়ে নিতে হবে তারপর পানি দিয়ে প্রেসার কুকারে বসিয়ে দিতে হবে। যার ফলে মাংসতে চর্বি থাকে না এবং কষানোটা ভালো হয় এবং মাংস ভালো সিদ্ধ হয়ে থাকে। প্রেসার কুকারে মাংস ভালোভাবে সিদ্ধ হতে কমপক্ষে ছয়টি সিটি বাজতে দিতে হয়



অন্য পোস্টঃনেবুলাইজার মেশিন ব্যবহারের সঠিক নিয়ম 

প্রেসার কুকারে রান্না করলে শতকরা কত ভাগ বিদ্যুৎ সাশ্রয় হয়


অনেকের প্রশ্ন প্রেসার কুকারে রান্না করলে কত ভাগ বিদ্যুৎ সাশ্রয় হয়ে থাকে। তাই তাদের জন্য অবশ্যই প্রেসার কুকারে রান্না করার আগে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের ব্যাপারটা জানা জরুরি। যারা প্রেশার কুকারে রান্না করে থাকেন তাদের শতকরা ২৫ ভাগ বিদ্যুৎ সাশ্রয় হয়ে থাকে। 



শেষ কথা,প্রেসার কুকার ব্যবহারের নিয়ম বা প্রেশার কুকার দিয়ে কিভাবে রান্নার কাজ সম্পূর্ণ করা যায় আশা করি আজকের পোস্টটি পড়ার মাধ্যমে এই বিষয়ে পরিপূর্ণ ধারণা পাওয়া গিয়েছে।তারপরেও যদি কোন ধরনের প্রশ্ন থেকে থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাতে পারেন। ধন্যবাদ। 


Post a Comment (0)
Previous Post Next Post