কারি পাতার উপকারিতা। কারি পাতা কোথায় পাওয়া যাবে

কারি পাতার উপকারিতা। কারি পাতা কোথায় পাওয়া যাবে


কারি পাতা আমরা অনেকেই মসলা হিসেবে চিনে থাকি।রান্নায় স্বাদ ও ঘ্রাণ বাড়ানোর জন্য অনেকেই কারি পাতা ব্যবহার করে থাকেন। কারি পাতা ব্যবহার করার রয়েছে অসংখ্য উপকারিতা। কারি পাতা রান্নায়  ব্যবহার করার মাধ্যমে রান্নার স্বাদ অনেক অংশে বেড়ে যায়।আজকের পোস্টে কারি পাতা খাওয়ার নিয়ম, কারি পাতার উপকারিতা ও কারি পাতা চেনার উপায় সম্পর্কে মোটামুটি ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করা হবে। তাহলে চলুন দেরি না করে জেনে নেওয়া যাক:-



কারি পাতার উপকারিতা 


কারি পাতার রয়েছে অসংখ্য কিছু উপকারিতা যাবেশিরভাগ লোকই জানেন না। নিচে কারি পাতার কয়েকটি বিস্ময়কর উপকারিতা তুলে ধরা হলো:-



ওজন কমাতে সাহায্য করে: কারি পাতাতে রয়েছে ডাইক্লোরোমেথেন, ইথাইল অ্যাসিটেট  নামক বিশেষ উপাদান যা সাধারণত ওজন কমাতে সাহায্য করে থাকে। তাছাড়া কারি পাতার কোলেস্টেরল কমানোর ও ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করার বিশেষ ক্ষমতা রয়েছে।তাই যারা বাড়তি ওজন নিয়ে চিন্তায় রয়েছেন তারা নিয়মিত কারি পাতা খাওয়ার অভ্যাস করতে পারেন তাহলে অল্প সময়ের মধ্যেই শরীরের বাড়তি ওজন দূর হবে। 



লিভার ভালো রাখে: কারি পাতা লিভারের জন্য খুবই উপকারী একটি উপাদান। নিয়মিত কারি পাতা খাওয়ার অভ্যাস করলে আমাদের লিভার ভালো রাখে এবং লিভার থেকে অনেক ধরনের বিষাক্ত পদার্থ দূর হয়ে থাকে। 



দৃষ্টিশক্তি উন্নত করে: কারি পাতা দৃষ্টি শক্তি উন্নত করতে সাহায্য করে থাকে। তাছাড়া চোখের ছানি পড়া প্রতিরোধ করতেও কারি পাতা খুবই কার্যকারী একটি উপাদান। 



বদহজম ও বমি ভাব দূর করে: কারি পাতা বদহজম ও বমি ভাব দূর করতে দারুন কাজ করে থাকে। প্রথমে কারি পাতা থেকে রস বের করে নিয়ে চিনির সঙ্গে মিশ্রিত করতে হবে। এর সাথে তাজা লেবুর রস যোগ করা যেতে পারে। বমি ভাব ও বদহজমের সমস্যা যাদের রয়েছে তাদের জন্য এই উপাদানটি খুবই কার্যকরী। 



ডায়রিয়া প্রতিরোধ করে থাকে: কারি পাতা ডায়রিয়া রোগের চিকিৎসায় খুবই কার্যকারী একটি ঔষধি। কারি পাতাতে রয়েছে কারবো জল ও আলকালেড যা ডায়রিয়া চিকিৎসায় দারুণ কাজ করে।তাই যাদের ডায়রিয়ার সমস্যা রয়েছে তারা কারি পাতার রস খেলে উপকার পেতে পারেন। 



পাচনতন্ত্র উন্নত করে থাকে: কারি পাতাতে রয়েছে আ্যলকালয়েড ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের মতো উপাদান যা সাধারণত পাচনতন্ত্রের কার্যকারিতা বৃদ্ধি করে থাকে। 



অর্শ রোগীদের জন্য উপকার বয়ে আনে: যাদের অর্শের সমস্যা রয়েছে তারা নিয়মিত কারি পাতার রস খেতে পারেন। কারি পাতার রস নিয়মিত খেলে অর্শের সমস্যা অনেকটা কমে আসে। 



তাছাড়া নিয়মিত কারি পাতা খেলে এসিডিটি, কোলেস্টেরলের কমানো,ত্বকের বুড়িয়ে যাওয়া রোধ করাসহ আরো অনেক সমস্যা দূর হয়ে থাকে।



অন্য পোস্টঃ সজনে পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা
 

কারিপাতা খাওয়ার নিয়ম


কারি পাতার সঠিক উপকারিতা পেতে হলে অবশ্যই কারি পাতা খাওয়ার সঠিক নিয়ম সম্পর্কে জানতে হবে। প্রতিদিন সকালে খালি পেটে কারি পাতার রস খাওয়া যেতে পারে। এটি হজম শক্তির উন্নতির পাশাপাশি কোষ্ঠকাঠিন্য ও গ্যাসের সমস্যা দূর করবে। তাছাড়া কেউ চাইলে চায়ের সাথে কারি পাতা ফুটিয়ে খেতে পারেন। কারি পাতা শুকিয়ে গুড়ো করে জলে গুলে খাওয়া যেতে পারে। তাছাড়া কেউ যদি সকালে কয়েকটি কারি পাতা রস করে নিয়মিত খেতে থাকেন তাহলে তার চুলের ঘনত্ব বৃদ্ধি পাবে। 




কারি পাতা চেনার উপায়


কারি পাতা গাছ অনেকেই চিনতে পারেন না। কারি পাতা ও কামিনী ফুলের গাছ অনেকটা একই রকম। কারি পাতা গাছগুলো পাঁচ থেকে ছয় মিটার উচ্চতার হয়ে থাকে। কারি পাতা দেখতে অনেকটা নিমপাতার মত হয়ে থাকে যার কারণে অনেকেই চিনতে ভুল করেন। 



কারি পাতা তীব্র ঘ্রাণযুক্ত হয়ে থাকে। তাছাড়া এই গাছটি সাদা রঙ্গের ফুল ফোটে ও ফুল থেকে অনেক সুগন্ধি পাওয়া যায়।এই গাছটি থেকে নিমের মতো ফল হয়ে থাকে। এই ফলগুলো পরিপক্ক হওয়ার সাথে সাথে লালচে থেকে কালো হয়ে যায়। কালো রঙ্গের এই ফলগুলো খাওয়া যায় কিন্তু বীজ কখনোই খাওয়া যাবেনা। কেননা এই বীজগুলো অনেক বিষাক্ত হয়ে থাকে। 



কারি পাতা কি নিম পাতা


কারি পাতা ও নিম পাতা অনেকটা একই ধরনের দেখতে হলেও এই দুটি গাছ একই গোত্রের না। কারি পাতা ও নিম পাতার মধ্যে গুনাগুনের দিক থেকেও অনেক পার্থক্য রয়েছে। তাই যারা কারিপাতা ও নিমপাতা কে এক ভেবে থাকেন তাদের এই ধারণাটা সম্পূর্ণ ভুল। 



অন্য পোস্ট: মরিয়ম ফুল খাওয়ার উপকারিতা 

কারি পাতা কোথায় পাওয়া যাবে


কারি পাতা কোথায় পাওয়া যাবে বা কারি পাতা বাংলাদেশে কোথায় পাওয়া যায় এই নিয়ে অনেকের প্রশ্ন রয়েছে।হিমালয়ের পাদদেশ থেকে শুরু করে সুন্দরবন সংলগ্ন অঞ্চলে কারি পাতা দেখা যায়। এই পাতা আমাদের দেশে মসলা হিসেবে ব্যবহার হয়ে থাকে। বাংলাদেশ থেকে যদি কারি পাতা কিনতে হয় তাহলে ঢাকার যে কোন বড় সবজির বাজারে চলে যেতে পারেন। 



শেষ কথা, আশা করি ইতিমধ্যে কারি পাতার উপকারিতা ও কারি পাতা খাওয়ার নিয়ম এই বিষয়ে মোটামুটি ধারণা পেয়ে গিয়েছেন। তারপরেও যদি এই নিয়ে কোন ধরনের প্রশ্ন থাকে বা পোস্টটি পড়ে কোন বিষয় সম্পর্কে বুঝতে কোন ধরনের অসুবিধা হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাতে পারেন। ধন্যবাদ। 

Akash

প্রযুক্তির খবর, শিক্ষা ও ইন্সুরেন্স, ভিসার খবর, স্বাস্থ্য টিপস ও অনলাইনে আয় সম্পর্কিত তথ্যের বিরাট একটি প্ল্যাটফর্ম।

Post a Comment (0)
Previous Post Next Post