টিন সার্টিফিকেট ডাউনলোড করার নিয়ম

 

টিন সার্টিফিকেট ডাউনলোড করার নিয়ম

টিন সার্টিফিকেট ডাউনলোডঃযারা সাধারণত নিয়মিত বাংলাদেশে বসবাস করে কর দিয়ে থাকেন তাদের অনেকের কাছেই টিন সার্টিফিকেট অনেক পরিচিত।আমাদের চলার পথে অনেক সময়ই টিন সার্টিফিকেটের দরকার হয়ে থাকে। তাহলে অবশ্যই বুঝতে পারছেন যে টিন সার্টিফিকেট এর প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। আজকের আর্টিকেলে আমি আপনাদের সাথে আলোচনা করব টিন সার্টিফিকেট কি এবং টিন সার্টিফিকেট ডাউনলোড,এবং টিন সার্টিফিকেট এর প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে।

যারা টিএন সার্টিফিকেট সম্পর্কে ভালোভাবে জানতে চান তারা অবশ্যই আমাদের এই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে পড়বেন। তাহলে চলুন প্রথমে জেনে নেওয়া যাক টিন সার্টিফিকেট কিঃ


টিন সার্টিফিকেট কি

টিন সার্টিফিকেট কে রাজস্ব বোর্ড থেকে পাওয়া এক ধরনের পরিচয় পত্র বলা হয়ে থাকে। আপনি সাধারনত এই টিন নাম্বার এর মাধ্যমে আয়কর দিতে পারবেন এবং আয়কর দেওয়া হয়ে গেলে তার জন্য একটি লিখিত কাগজ পেতে পারবেন।টিন সার্টিফিকেট মূলত জমি কেনা ও ফ্ল্যাট কেনার সময় বেশি ব্যবহার করা হয়ে থাকে।

তাছাড়া টিন সার্টিফিকেট আমাদের আরো অনেক কাজে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। যার ফলে বুঝতেই পারছেন যে টিন সার্টিফিকেট এর গুরুত্ব এবং প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।


টিন সার্টিফিকেট কেন দরকার

টিন সার্টিফিকেট আমাদের অনেক কাজেই প্রয়োজন হয়ে থাকে তার মধ্যে কিছু গুরুত্বপূর্ণ যেসব কাজে টিন সার্টিফিকেট ব্যবহার করা হয়ে থাকে তার নিচে উল্লেখ করা হলো।

১.আমদানি করার ক্ষেত্রে আমদানি পত্র রেজিস্ট্রেশন করার জন্য টিন সার্টিফিকেট প্রয়োজন।

২.শহরে অথবা পৌরসভায় ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন করার জন্য আপনার টিএন সার্টিফিকেটের দরকার হবে।

৩.মাল সরবরাহ চুক্তিনামা এবং অন্যান্য নানা বাণিজ্যের ক্ষেত্রে এই সার্টিফিকেট প্রয়োজন হয়ে থাকে।

৪.সিটি করপোরেশন এলাকায় আপনি যদি এক লাখ টাকার উপরে যে কোন জমি কিনে থাকেন তাহলে আপনার টিন সার্টিফিকেট লাগবে।

৫.কোম্পানি রেজিস্ট্রেশন এর জন্য এবং ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করার জন্য টিন সার্টিফিকেট লাগবে।

৬.গাড়ি অথবা মাইক্রোবাসের রেজিস্ট্রেশন কিংবা মালিকানা পরিবর্তনের জন্য এই সার্টিফিকেট এর প্রয়োজন হবে। যার কারণে টিন সার্টিফিকেট ডাউনলোড গুরুত্বপূর্ণ।

তাছাড়া আরও অনেক কাজে এই সার্টিফিকেট ব্যবহার করা হয়ে থাকে যা আমি আপনাদেরকে বিস্তারিত আর বললাম না।

টিএন সার্টিফিকেট কিভাবে পাবো

অনেকে প্রশ্ন করে থাকেন যে আমরা টিন সার্টিফিকেট কিভাবে পাবো। যারা সাধারণত এই প্রশ্নগুলো করে থাকেন তাদের জন্য আমি আজকে খুবই সহজ একটি পদ্ধতি বলব যে পদ্ধতি ব্যবহার করে আপনারা খুব সহজেই টিন সার্টিফিকেট পেয়ে যাবেন। আপনারা এই উপায় অবলম্বন করার মাধ্যমে অনলাইনের মাধ্যমে টিন সার্টিফিকেট পাবেন।

অনলাইনে টিন সার্টিফিকেট আবেদন প্রক্রিয়া

আপনারা চাইলে এখন ঘরে বসে খুব সহজেই অনলাইনের মাধ্যমে টিন সার্টিফিকেট এর জন্য আবেদন করতে পারবেন। অনলাইনের মাধ্যমে টি এন সার্টিফিকেটের জন্য আবেদন করা হয়ে থাকে তাকে বলা হয় ই-টিন আবেদন প্রক্রিয়া।এবার আমি আপনাদেরকে ধাপে ধাপে বলব কিভাবে আপনারা অনলাইনে টি এন সার্টিফিকেট আবেদন করবেন।


ধাপ ১ঃপ্রথমে আপনাকে সরাসরি আপনার ব্রাউজার থেকে google-এ চলে যেতে হবে এবং সেখানে গিয়ে আপনাকে https://secure.incometax.gov.bd/ এই লিংকটি প্রেস করতে হবে। তারপর দেখবেন আপনি সরাসরি সেখান থেকে একটি ওয়েবসাইটে চলে গিয়েছেন।

ধাপ ২ঃতারপর সেখানে গিয়ে আপনি আপনার প্রয়োজনীয় তথ্যাদি যেমন নাম, মোবাইল নাম্বার, জন্ম নিবন্ধন নাম্বার, ন্যাশনাল আইডি কার্ড নাম্বার, ইত্যাদি সকল তথ্য সঠিকভাবে পূরণ করে তারপর সাবমিট বাটনে ক্লিক করতে হবে।

ধাপ ৩ঃপরবর্তীতে আপনার দেওয়া সমস্ত তথ্য যাচাই করার পর আপনাকে টিন সার্টিফিকেট প্রদান করা হবে।

আপনাদেরকে এবার আমি বলব টিন সার্টিফিকেট ডাউনলোড এবং কেন সার্টিফিকেট যাচাই সম্পর্কে।

টিন সার্টিফিকেট যাচাই

টিন সার্টিফিকেট এর প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে তো আপনারা অনেক আগেই জেনে গিয়েছেন। টিন সার্টিফিকেট মূলত বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। যার কারণে আমাদের যখন টিন সার্টিফিকেট তৈরি করতে হয় তখন একেবারে নির্ভুল তথ্য দিয়ে সেটি তৈরি করা উচিত।

টিন সার্টিফিকেট অফলাইনে এবং অনলাইনে দুটি ভাবেই তৈরি করা যায় যার ফলে এর তথ্যাদি কিছু কিছু ক্ষেত্রে ভুল হতেই পারে।

এখন প্রচুর মানুষের জন্য টিন সার্টিফিকেট লাগবে যে কারণে কর্তৃপক্ষকে হাজার হাজার মানুষের টিন সার্টিফিকেট তৈরি করতে হচ্ছে। যার ফলে হয়তো কোন কোন মানুষের ক্ষেত্রে জন্ম, তারিখ আইডি নম্বর, এছাড়া অন্য কোন কিছু হয়তো ভুল হয়ে যাচ্ছে।যারা নির্ভুল টিন সার্টিফিকেট নিতে চায় তাহলে তাদের করণীয় কি।

করণীয় অবশ্যই আছে আপনি যখন টিন সার্টিফিকেট হাতে পেয়ে যাবেন তখন সবার আগে আপনার কাজ হবে আপনার এই সার্টিফিকেটটি সব তথ্য ঠিক আছে কিনা সেটা যাচাই-বাছাই করা। সাথে সাথে যদি আপনি আপনার টিন সার্টিফিকেট এ কোন ধরনের তথ্য ভুল পেয়ে থাকেন তাহলে কর্তৃপক্ষের কাছে নিয়ে যেতে পারেন এবং সেখান থেকে সেটি পরে সংশোধন করতে পারেন।আর পরবর্তীতে যদি আপনি সংশোধন করতে চান তাহলে অনেক ভোগান্তির শিকার হবেন।

টিন সার্টিফিকেট ডাউনলোড

আপনাদেরকে এবার আমি বলব টিন সার্টিফিকেট ডাউনলোড সম্পর্কে।আপনি যদি টিন সার্টিফিকেট ডাউনলোড করতে চান তাহলে সঠিক তথ্য দিয়ে খুব সহজেই ডাউনলোড করতে পারবেন।আপনি এখন চাইলে ঘরে বসেই আপনার টিন সার্টিফিকেট তৈরি করতে পারবেন যেটি অনেক সহজ।

আপনাকে এই ক্ষেত্রে এই ওয়েবসাইটটিতে যাওয়ার মাধ্যমে https://secure.incometax.gov.bd/ ইমেইল আইডি এবং পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে খুব সহজেই আপনি আপনার টিন সার্টিফিকেট ডাউনলোড করতে পারবেন।


টিন সার্টিফিকেট নবায়ন করার নিয়ম

আপনাদের যদি কোন ক্ষেত্রে টিন সার্টিফিকেট নবায়ন করার প্রয়োজন হয়ে থাকে তাহলে ঘরে বসেই আপনারা কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করার মাধ্যমে টিন সার্টিফিকেট নবায়ন করতে পারবেন।তাহলে চলুন এবার জেনে নেওয়া যাক টিন সার্টিফিকেট নবায়ন করার নিয়ম সম্পর্কেঃ 

১.প্রথমে আপনাকে টিন সার্টিফিকেট এর ওয়েবসাইটে সরাসরি প্রবেশ করতে হবে।

২.তারপরে সেখানে ইউজারনেম এবং পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করতে হবে।

৩.লগইন করার পর আপনি এবার বিভিন্ন অপশন দেখতে পারবেন। আপনাকে এবার এর মধ্য থেকে এডিট/আপডেট অপশনের মধ্যে যেকোনো অপশন সিলেক্ট করতে হবে।

৪.আপনি এবার যে টাইপের তথ্য সংশোধন করতে চান সেটি সিলেক্ট করে ফেলুন।

৫.তারপরে আপনি সঠিক তথ্য দিয়ে সাবমিট বাটনে ক্লিক করুন। এভাবে মূলত আপনি আপনার টিন সার্টিফিকেট সংশোধন এবং খুব সহজেই রিকোয়েস্ট সাবমিট করতে পারবেন।সবকিছু যদি ঠিকঠাক ভাবে করতে পারেন তাহলে কিছু সময় পর আপনি সেই সাইটে তার আপডেট পেয়ে যাবেন।


টিন সার্টিফিকেট বাতিল করার নিয়ম

আপনার টিন সার্টিফিকেট এর যদি কোন ধরনের সমস্যা হয়ে থাকে তাহলে আপনি চাইলে ঘরে বসেই টিন সার্টিফিকেট বাতিল করার জন্য আবেদন করতে পারবেন। এতক্ষণে আপনাদেরকে টিন সার্টিফিকেট ডাউনলোড সম্পর্কে বললাম এবার বলবো টিন সার্টিফিকেট বাতিল করার নিয়ম সম্পর্কে।

★টিন সার্টিফিকেট বাতিল করার জন্য সুনির্দিষ্ট কোনো নির্দেশনা নয় তবে আপনি চাইলে এ পদ্ধতি অবলম্বন করার মাধ্যমে টিন সার্টিফিকেট বাতিল করতে পারেন।

★আপনি যে অঞ্চলের অধীনে আপনার টিন সার্টিফিকেট তৈরি করেছেন সেই অঞ্চলের উপ কর কমিশনার বরাবর আপনাকে টিন সার্টিফিকেট বাতিলের জন্য আবেদন করতে হবে।

★দরখাস্ত  করার পূর্বে অবশ্যই আপনাকে সময় নিয়ে অপেক্ষা করতে হবে।একজন করদাতা হতে যে পরিমাণ আয় করা প্রয়োজন সেই পরিমান আয় যদি আপনার না থাকে তাহলে আপনাকে কম পক্ষে  তিন বছর শূন্য রিটার্ন দাখিল করতে হবে।

★তিন বছর 0 রিটার্ন  দেওয়ার পরেও যদি আপনার সামনে করযোগ্য আয় এর কোনো সম্ভাবনা না থাকে তাহলে আপনি এই ক্ষেত্রে তৃতীয় বছরের রিটার্ন জমা দেওয়ার সময় আপনার আইকন যে ফাইল টা রয়েছে সেটি নথিভূক্ত  করার জন্য একটি আবেদন করতে হবে উপ-কমিশনারের কাছে।

★তারপরে উপ-কমিশনার যদি আপনার দরখাস্তের সন্তুষ্ট হয়ে থাকে তাহলে আপনার ফাইলটি নথিস্থ করে রাখবেন।

★পরবর্তীতে যদি আপনার কর দেওয়া মতো আই হয়ে থাকে তাহলে আপনি তখন সে ফাইলটি পুনরায় সচল করবেন।আপনারা চাইলে শুধুমাত্র একটি আইডি কার্ডের অধীনে একটি টিন সার্টিফিকেট খুলতে পারবেন।


আমাদের শেষ কথা

আশা করি আজকের আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে টিন সার্টিফিকেট কি এবং টিন সার্টিফিকেট ডাউনলোড কিভাবে করবেন সেই সম্পর্কে আপনারা মোটামুটি ধারণা পেয়ে গিয়েছেন। আমরা এখানে আরও অনেক বিস্তারিত বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছি। তার পরেও যদি আপনাদের এই বিষয়ে কোন ধরনের প্রশ্ন থেকে থাকে আমাদের কমেন্ট করে জানাতে পারেন।আর আমাদের আর্টিকেলটি যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে তাহলে শেয়ার করে অন্যদের দেখার সুযোগ করে দিন।

আরো দেখুন 

 ফ্রী লটারি থেকে টাকা ইনকাম করার উপায়

 স্মার্ট কার্ড চেক করার নিয়ম 

এসএসসি রেজাল্ট চেক করার নিয়ম 

Akash

প্রযুক্তির খবর, শিক্ষা ও ইন্সুরেন্স, ভিসার খবর, স্বাস্থ্য টিপস ও অনলাইনে আয় সম্পর্কিত তথ্যের বিরাট একটি প্ল্যাটফর্ম।

1 Comments

  1. অনেক ধন্যবাদ এমন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দেয়ার জন্য।

    ReplyDelete
Post a Comment
Previous Post Next Post