মসুর ডাল দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায়

মসুর ডাল দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায়


মানুষের মুখের ত্বক খুবই সেনসিটিভ একটা জায়গা, যেখানে মাঝে মাঝেই দেখা দেয় ব্রণের সমস্যা, আবার কখনো কখনো ডার্ক সার্কেল, মরা চামড়া ওঠা, বুড়িয়ে যাওয়া, শুষ্ক ত্বক ইত্যাদি নানা সমস্যার আগমন ঘটে। তাই সচরাচর সব মানুষ ত্বকের যত্ন করতে বিভিন্ন ফেসপ্যাক ব্যবহার করে থাকেন, যেগুলো ঘরোয়া পদ্ধতিতে তৈরি করা হয়।


প্রাকৃতিক উপায়ে ঘরোয়া পদ্ধতিতে তৈরি কিন্তু সেইসব ফেসপ্যাকে থেকে থাকে বিভিন্ন উপাদান। আর তার মধ্যে ত্বকের যত্নে যুগ যুগ ধরে রূপচর্চার অনুষঙ্গ হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে মসুর ডাল, যা ত্বকে জমে থাকা ময়লা ও বলিরেখা দূর করে ত্বকের দুর্দান্ত কাজ করে। যেটা আমি আপনি জানলে খুব সহজেই অবাক হতে বাধ্য। 


তাই যারা নিজেদের ত্বকের ময়লা ও বলিরেখা দূর করার জন্য ব্যতিব্যস্ত হয়ে পড়েছেন, তারা আমাদের আজকের এই কনটেন্টটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত একবার চোখ বুলিয়ে নিন। কারণ আজ আমরা আমাদের এই ছোট্ট কনটেন্টে আলোচনা করব মসুর ডাল দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায় এবং ত্বকের যেকোনো সমস্যার সমাধানে মসুর ডালের কার্যকরী ভূমিকা সম্পর্কে। 

তাহলে দর্শক বন্ধুরা চলুন, শুরু করি আমাদের মূল আলোচনা আর জেনে নেই মসুর ডাল দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায়।



অন্য পোস্টঃফর্সা হওয়ার পাঁচটি সাবানের নাম 


মসুর ডাল দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায়



ত্বকের যত্নে মসুর ডাল ব্যবহার করা আজকালকার প্রচলিত অনুষঙ্গ নয়। এটা বহু কাল আগে থেকে ব্যবহার করা হচ্ছে এবং ইতোমধ্যে পরীক্ষা দ্বারা প্রমাণিত হয়েছে মসুর ত্বকের জন্য এতটাই কার্যকরী যে, সেটা ময়লা ও বলিরেখা দূর করার পাশাপাশি ত্বককে ভেতর থেকে করে পরিষ্কার এবং কোমল, যা একজন মানুষকে সুন্দরী গ্ল্যামারাস হিসেবে পরিচিত করতে সক্ষম। 


হয়তো আপনারা জেনে থাকবেন, অতীতে বিয়ের কয়েক দিন আগ থেকে কনের মুখে মসুর ডাল বেটে লাগানো হতো। আর এর অন্যতম কারণ ছিল এতে তাৎক্ষণিক ফর্সা ত্বক পাওয়া যায়। মসুর ডালে থাকা অ্যান্টি এজিং উপাদান ত্বক ফর্সা করতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। 


তাছাড়াও ইতোমধ্যে আরও জানা গেছে, মসুর ডালের যে কোন ফেসপ্যাক ব্যবহারে ত্বকের টিস্যু সজীব হয় এবং মাত্র সপ্তাহে  দু-তিনবার ব্যবহার করলেই ত্বক হয়ে ওঠে টানটান এবং নমনীয়, পাশাপাশি বলি রেখাটাও নিয়ন্ত্রণে থাকে। 


শুধু তাই নয়, যাদের ত্বকের শুষ্কতার সমস্যা রয়েছে তাদের সেই ড্রাই স্কিনকে নমনীয় করতেও মসুর ডালের ফেসপ্যাক অধিক বেশি কার্যকরী। জানা গেছে, দুধের সঙ্গে মসুর ডাল বাটা মিশিয়ে ত্বকে ব্যবহার করলে আর্দ্রতা বজায় থাকে, ফলে ত্বকের বিভিন্ন সমস্যার প্রকোপ কমে যায় এবং ত্বক ফর্সা হয়ে ওঠে ও ড্রাই স্কিনের সমস্যা থেকে পরিত্রান মিলে। তাহলে বুঝতেই পারছেন অতি পরিচিত এই সাধারণ একটি উপাদান আমাদের রূপচর্চার জন্য কতটা কার্যকরী। 


এতক্ষণ তো আমরা মসুর ডালের গুণাবলী সম্পর্কে জানলাম, এটি ত্বককে ফর্সা করে সেই সম্পর্কে অবগত হলাম। এখন কথা হলো, আপনি কিভাবে এটি ব্যবহার করলে সুফল পাবেন? কি কি উপায়ে মসুর ডাল দিয়ে রূপচর্চা করা যায়? কিভাবে ত্বকের যত্নে মসুরের ডাল ব্যবহার করা যায়? আপনি জানেন কি? যদি জেনে থাকেন তাহলে বেশ ভালো, আর যদি না জেনে থাকেন তাহলে আমাদের আজকের এই কনটেন্টের শেষ পর্যায়ে জেনে নিন মসুর ডাল দিয়ে ত্বক উজ্জ্বল ফর্সা করার সহজ কয়েকটি উপায় সম্পর্কে।



রূপচর্চায় মসুর ডালের ব্যবহার



পদ্ধতি ১. 


উপকরণ: মসুর ডাল + টক দই + বেসন


তৈরীর প্রক্রিয়া+ব্যবহার বিধি: সমপরিমাণ মসুর ডাল বাটা, টক দই আর বেসন একসাথে শুরুতে ভালোভাবে মিক্সড করতে হবে। পরবর্তীতে এর সাথে নিতে হবে এক চিমটি হলুদ গুঁড়া। এরপর সবগুলো উপকরণ ভালোভাবে মিক্স করে মুখে এপ্লাই করতে হবে। 


যখন পরবর্তীতে সেটা শুকিয়ে টানটান হয়ে আসবে তখন হাত পানিতে ভিজিয়ে আলতো করে ম্যাসাজ করে মুখের ত্বক থেকে সেটা ধুয়ে ফেলতে হবে ঠান্ডা পানিতে। 


এভাবে নিয়মিত সপ্তাহে দুইবার করলে যে কেউ তাদের ত্বকের উন্নতি উপলব্ধি করতে পারবে। মূলত আপনি যদি ত্বকের রং ভীষণভাবে উজ্জ্বল করতে, কার্যকর ভাবে ব্রণ ও ডার্ক সার্কেল দূর করতে চান, তাহলে ঘরে তৈরিকৃত এই উপটান ব্যবহার করে আপনার ত্বককে খুব সহজে স্মুথ এবং লাবণ্যময় করতে পারেন। শুধু তাই নয় এই প্যাকটি বডি ফেয়ারনেস বাড়াতেও সমান ভাবে কাজ করে। তাই এক্ষেত্রেও সমানভাবে ব্যবহার করে সুফল পেতে পারেন।



অন্য পোস্টঃদ্রুত ভেতর থেকে ফর্সা হয়ে ওঠার উপায়
 

পদ্ধতি ২.


উপকরণ: মসুর ডাল+কাঁচা দুধ+হলুদ


তৈরীর প্রক্রিয়া + ব্যবহার বিধি: এক চামচ মসুর ডাল বাটা, সাথে এক চা চামচ কাঁচা দুধ এবং এক চিমটি হলুদ গুঁড়ো একটি পাশে নিয়ে ভালোভাবে ঠান্ডা পানি দিয়ে ভালোভাবে মিক্স করতে হবে শুরুতে। এরপর সব ধরনের ফেসপ্যাক এর মতো ঠিক এই ফেসপ্যাকটাও মুখে ভালোভাবে এপ্লাই করতে হবে। তারপর সেটা ত্বকে শুকিয়ে আসলে সুন্দরভাবে ঘষে ঘষে ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে দৈনিক ব্যবহৃত মশ্চারাইজার ব্যবহার করে হবে। এতে করে ত্বক হবে ফর্সা, উজ্জ্বল এবং লাবণ্যময়।



পদ্ধতি ৩.


উপকরণ: মসুর ডাল + মধু


তৈরির প্রক্রিয়া + ব্যবহার বিধি: প্রথমত এক চা চামচ মধু আর এক চা চামচ মসুর ডাল বাটা মিক্স করে এটি ভালোভাবে মুখে এপ্লাই করতে হবে এবং ১৫ মিনিট পরে হালকা ভাবে আলতো করে ঘষে ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। আর এভাবে নিয়মিত করলে যাদের স্কিন ড্রাই তারা খুব ভালো ফলাফল পাবে। 

কারণ মসুর ডাল স্কিনের মৃত কোষ দূর করে স্কিনের সফটনেস আনতে খুব ভালোভাবে কাজ করে। সেই সাথে স্কিনের উজ্জ্বলতা বাড়ায় এবং মোলায়েম করে ত্বককে 



পদ্ধতি ৪ .


উপকরণ: মসুর ডাল + গাঁদা ফুল


তৈরির প্রক্রিয়া+ব্যবহারবিধি: মসুর ডাল আর গাঁদা ফুল দিয়ে ফেসপ্যাক তৈরি করার জন্য পরিমাণ মতো মসুর ডাল বাটা এবং গাঁদা ফুলের পাপড়ি বাটা একসাথে ভালোভাবে মিক্স করতে হবে। এরপরে সেটা ভালোভাবে প্রতিটি ফেসপ্যাক এর মত ঠিক একইভাবে মুখে এপ্লাই করতে হবে। সত্যি বলছি আপনি যদি নিয়মিত এই ফেসপ্যাক দিয়ে আপনার ত্বকের যত্ন নেন তাহলে স্কিনের প্রেমে পড়ে যাবেন নির্ঘাত। 


কারণ মসুর ডাল প্লাস গাঁদা ফুল দুটোই আমাদের স্কিনের যত্নের জন্য অত্যন্ত কার্যকরী এবং জনপ্রিয় একটি উপাদান। 



অন্য পোস্টঃলেবু দিয়ে ফর্সা হয়ে ওঠার উপায় 


পদ্ধতি ৫.


উপকরণ: মসুর ডাল + শসা


তৈরীর প্রক্রিয়া + ব্যবহার বিধি: এক চা চামচ মসুর ডাল বাটার সাথে পরিমাণ মতো শসার রস সুন্দরভাবে মিক্সড করে সেটা স্ক্রিনে ঘসে ঘষে লাগিয়ে তা শুকানো পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। এরপর তা ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ভালোভাবে আলতোভাবে মুছতে হবে আর এটা যদি নিয়মিত এপ্লাই করা হয় ত্বকে, তাহলে খুব সহজেই ত্বক হবে মসৃণ ও উজ্জ্বল। যা যেকোনো কারোর ত্বককে করে তুলবে ভেতর থেকে ফর্সা। শুধু তাই নয় তৈলাক্ত ত্বকের জন্যেও এই মসুর ডাল এর ফেসপ্যাক বেশ কার্যকরী ভূমিকা রাখে। 



তাই আপনি যদি আপনার ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করতে চান এবং বুড়িয়ে যাওয়া ভাব কাটিয়ে উঠে নিজেকে একজন সুন্দর ত্বকের অধিকারীনি করতে চান তাহলে আজ থেকেই মসুর ডাল ব্যবহার করে এই ফেসপ্যাক গুলো তৈরি করে আপনার মুখে এপ্লাই করুন। দর্শক বন্ধুরা আশা করি আমাদের আজকের এই মসুর ডাল দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায় কনটেন্টটি আপনাদের এতটুকু হলেও উপকারে আসবে। তো যদি ভালো লাগে তাহলে অবশ্যই আমাদের সাথে থাকবেন। খুব তাড়াতাড়ি আবারো আপনাদের সাথে নতুন টপিকের নতুন কোন আলোচনায় দেখা হবে কথা হবে। সবাই ভাল থাকবেন সুস্থ থাকবেন এবং নিজেদের যত্ন নেবেন আল্লাহ হাফেজ।


Post a Comment (0)
Previous Post Next Post