জমজম কূপের পানি খাওয়ার নিয়ম

জমজম কূপের পানি খাওয়ার নিয়ম


জমজম কূপ হচ্ছে মুসলমানদের কাছে খুবই পবিত্র একটি নাম।জমজম কূপ হচ্ছে মক্কার মসজিদুল হারামের অভ্যন্তরে অবস্থিত একটি পবিত্র কুয়া।এই কুয়াটি সাধারণত কাবাঘর থেকে ২০ মিনিট পূর্বে অবস্থিত। জমজম কূপের পানি মুসলমানদের জন্য খুবই পবিত্র এবং এই পানি খেলে মুসলমানদের শরীরের নারা ধরনের উপকার সাধন হয়ে থাকে।অর্থাৎ জমজম কূপের পানি খাওয়ার রয়েছে অসংখ্য উপকারিতা। জমজমের পানি খাওয়ার নিয়ম বা জমজম কূপের পানির উপকারিতা নিয়ে থাকছে আজকের পোস্টটি।



জমজম কূপ কোথায় অবস্থিত


জমজম সৌদি আরবের মক্কাতে অবস্থিত। অর্থাৎ জমজম কূপটি সৌদি আরবের মক্কায় অবস্থিত কাবা শরীফ থেকে মাত্র ২০ ফুট পূর্বে অবস্থিত। জমজম কূপের রয়েছে ঐতিহাসিক সব ইতিহাস। ইসলামিক বর্ণনা অনুযায়ী নবী ইব্রাহিম আলাইহি সাল্লাম এবং তার স্ত্রী হাজেরা তাদের শিশু পুত্র ইসমাইলকে মরুভূমিতে রেখে আসার পর ইসমাইল আলাইহি সালামের পায়ের আঘাতে এই জমজম কূপের সৃষ্টি হয়েছে। যারা মক্কার মসজিদুল হারামে নামাজ আদায় করতে আসেন বা অন্যান্য স্থান থেকে এসে থাকেন তারা জমজম কূপের পানি পান করে থাকেন।জমজম কূপ হচ্ছে অসাধারণ একটি কূপ কেননা এখান থেকে একটানা ৫ হাজার পানি পাওয়া যাচ্ছে। আর এই কারণেই সাধারণত মুসলমানদের পবিত্র এই জমজম কূপকে প্রাচীনতম স্বয়ংক্রিয় কূপ হিসেবে ধরা হয়ে থাকে।



অন্য পোস্টঃতারাবির নামাজ পড়ার নিয়ম কানুন এবং এর ফজিলত

জমজম কূপের পানির উপকারিতা


জমজম কূপের পানি হচ্ছে মহান আল্লাহতালার কাছ থেকে পাওয়া বরকতময় নেয়ামতের পানি। হজ এবং ওমরায় অংশগ্রহণকারী ব্যক্তিদের জন্য আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু সাল্লাম জমজমের পানি খাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। অর্থাৎ একজন মুসলমান যদি জমজমের পানি পান করেন তাহলে তার মাধ্যমে ঈমানের বহিঃপ্রকাশ হয়। 



হাদিস শরীফে বর্ণিত আছে জমজমের পানি যে ব্যক্তি যে সমস্যার জন্য পান করবে সেই ব্যক্তির সেই সমস্যা দূর হবে। জমজমের পানি যদি মহান আল্লাহতালার নাম স্মরণ করে খাওয়া যায় তাহলে শরীর সুস্থ হয়ে যাবে। তাই যেই সকল মুমিন ব্যক্তি জমজমের পানি পান করবেন তাদের অবশ্যই উচিত যথাযথ সম্মান এবং দোয়ার সাথে জমজমের পানি পান করা। 



জমজমের পানিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম আমাদের শরীরের বিভিন্ন উপকার সাধন করে থাকে। অর্থাৎ সাধারণ পানি থেকে জমজমের পানিতে ম্যাগনেসিয়াম ও ক্যালসিয়াম এর পরিমাণ কিছুটা বেশি। জমজমের পানি হচ্ছে পৃথিবীর অন্যতম বিশুদ্ধ পানি যার মধ্যে কোন ধরনের দূষিত পদার্থ নেই। জমজমের পানি খাওয়ার ফলে আমাদের শরীরের সেল সিস্টেমের শক্তির মাত্রা আশ্চর্যজনকভাবে বেড়ে যায়।জমজমের পানিতে রয়েছে ফ্লোরাইট যা সাধারণত পানিকে জীবাণুনাসক রাখতে সাহায্য করে থাকে। জমজমের পানি পান করলে শরীরে এসিডিটির মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে, এবং আলসার ও হৃদ যন্ত্রের  যন্ত্রের বিভিন্ন সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।



জমজমের পানি খাওয়ার নিয়ম


জমজমের পানি খাওয়ার যেমন উপকারিতা রয়েছে তেমনি জমজমের পানি খাওয়ার নির্দিষ্ট নিয়ম রয়েছে। জমজমের পানি সাধারণ অবস্থায় দাঁড়িয়ে এবং বসে খাওয়া দুই অবস্থাতে জায়েজ রয়েছে।তবে জমজম থেকে পানি পানকারী ব্যক্তির জন্য সুন্নত হলো পুরোপুরি ভাবে পরিতৃপ্ত হয়ে পানি পান করা। তাছাড়া ফকিহওগন গোয়ান জমজমের পানি পানের কিছু নিয়ম উল্লেখ করেছেন যেমন :-



➡️কিবলামুখী হয়ে খাওয়া 


➡️বিসমিল্লাহ বলে খাওয়া 


➡️তিন শ্বাসে পান করা 


➡️পরিতৃপ্ত হওয়া এবং শেষে আলহামদুলিল্লাহ বলা 



তাছাড়া প্রত্যেক মুমিনের অবশ্যই জমজমের পানি ইবাদাত মনে করে পান করা উচিত।



অন্য পোস্টঃসালাতুত তাসবিহ নামাজের নিয়ম

জমজমের পানি খাওয়ার দোয়া


আমাদের মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু সাল্লাম বলেছেন জমজমের পানি যে উদ্দেশ্যে পান করা হবে সেই উদ্দেশ্য সাধিত হবে। পূর্বসূরী মনীষীদের জীবন ইতিহাস খুঁজলে পাওয়া যায় তারা জমজমের পানি খাওয়ার আগে দোয়া পাঠ করতেন।হযরত ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু তা'আলা এ পানি পান করার সময় একটি দোয়া বর্ণনা করার পরামর্শ দিয়েছেন-


আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকা ইলমান নাফিয়া,ওয়া

রিযক্বান ওয়াসিআ’; ওয়া আ’মালান সালিহা; ওয়া শিফাআম মিং কুল্লি দা-য়িন।


অর্থঃহে আল্লাহ আপনি আমাদেরকে উপকারী জ্ঞান দান করুন। আপনি আমাদের রিজিককে বরকত করে দিন। আমাদেরকে আপনি সকল সময় নেক কাজ করার তৌফিক দান করুন। সকল অসুস্থতা ও সেফা থেকে আমাদের সুস্থতা দান করুন। 



শেষ কথা, আশা করি আজকের পোস্টটি যারা পড়েছেন তারা জমজমের পানি খাওয়ার নিয়ম বা জমজমের পানি খাওয়ার ফজিলত সম্পর্কে সঠিক ধারণা পেয়েছেন। কেননা জমজমের পানি মুসলমানদের জন্য বড় একটি নেয়ামত তাই অবশ্যই জমজমের পানি খাওয়ার সঠিক নিয়মটা আমাদের জানা জরুরী। 


Post a Comment (0)
Previous Post Next Post