চিকন হওয়ার উপায়

 

চিকন হওয়ার উপায়

চিকন হওয়ার উপায়ঃ হয়তো আপনি আপনার ছোটকালে অনেক চিকন ছিলেন আর এখন আপনি হঠাৎ অনেক মোটা হয়ে গেছেন। অথবা আপনি একজন মোটা মানুষ কিন্তু মোটা হওয়ায় আপনি সন্তুষ্ট না আপনি চিকন হতে চান। আর এই চিকন জন্য প্রয়োজন সঠিক নিয়ম ও পদ্ধতি অনুসরন করে জীবন পরিচালনা করা। অনেক মানুষ ভেবে থাকেন যে না খেয়ে বা কম খেয়ে থাকলে চিকন হওয়া যায়। 


আসলে এই ধরনাটিও একশত ভাগ সত্য নয়। আর ভুল নিয়ম অনুসরণ করে আপনি চিকন হওয়ার চেষ্টা করলে আপনার উপকারের চেয়েও ক্ষতির সম্ভাবনা ও অনেক বেশি আছে। তাই আজকের এই আর্টিকেলে আমরা সঠিক কিছু নিয়ম পদ্ধতি ও গাইডলাইন দেওয়া হল যেগুলো সঠিকভাবে অনুসরন করলে আপনি অল্প সময়ে চিকন ও স্লিম হতে পারবেন।


চিকন হওয়ার সহজ উপায়সমূহ/চিকন হওয়ার উপায় কি/


চিকন হতে হলে আপনাকে অবশ্যই সঠিক গাইডলাইন মেনে জীবন পরিচালনা করতে হবে। আপনাকে প্রথমে আপনার সমস্যা খুজতে হবে। অর্থাৎ আপনি কেন মোটা হচ্ছেন। মানুষ সাধারণ বিভিন্ন কারনে মোটা হতে পারে। সাধারণভাবে আমাদের দেহ মোটা বা চিকন হওয়ার বিষয়টি নির্ভর করে আদের প্রতিদিনের খাদ্যতালিকা আমাদের লাইফস্টাইল ও আমাদের পরিবেশের উপর। এছাড়াও মানুষ ঘুমের ঘাটতির কারনে ও ঔষধের পাশ্ব প্রতিক্রিয়ার কারনে ও আপনি অতিরিক্ত মোটা হতে পারেন।


অন্য পোস্টঃএলোভেরা দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায় 


(১) আপনাকে BMR জানতে হবে :  বিএম আর হলো একটি ক্যালকুলেশন সিস্টেম। এটি আমাদের শরীরের উচ্চতা আমাদের বর্তমান ওজন ও দৈনিক কাজের হিসাব ক্যলকুলেট করে দৈনিক আমাদের দেহের জন্য পরিমিত ক্যালরির পরিমান বলে দেয়। BMR হিসেব করার জন্য আপনি গুগলের ক্যালকুলেটরের সাহায্য নিতে পারেন। 


BMR হিসেব শেষে এটি আপনার পরিমিত ক্যালরির যেই হিসেব দিবে আপনি চিকন হওয়ার জন্য তার থেকে ঠিক পনের ভাগ ক্যালুরি কম গ্রহন করতে হবে। এবং মনে রাখবেন যে আস্তে আস্তে আপনাকে ক্যালোরি গ্রহনের পরিমান বিশ বা পঁচিশ ভাগ কমিয়ে আনতে হবে। আবার ক্যলোরি গ্রহনের পরিমান একেবারে কমিয়ে ফেলা যাবে না এতে আপনার শরিরের অনেক বেশি পরিমানে ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।


(২) ব্রেকফাস্ট করুন সময়মত : চিকন হওয়ায় জন্য সঠিক পদ্ধতিতে সঠিক সময়ে ব্রেকফাস্ট করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অনেক মানুষ চিকন হওয়ার আসায় সকালের নাশতা বা ব্রেকফাস্ট করাই বাদ দিয়ে ফেলে। আসলে এটি আপনার শরিরের জন্য খুবই হুমকিস্বরূপ। প্রথমত আপনি ব্রেকফাস্ট বন্ধ করে দিলে আপনার শরিরের কিছু ওজন কমে আপনি চিকন হলে এটি বেশিদিন দীর্ঘস্থায়ী হবেনা।


আপনার আগের একই ওজন ফিরে আসবে খুব শিঘ্রই। আর সকালে সঠিক সময়ে ব্রেকফাস্ট আপনার শরিরের হজমি শক্তি ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি করে ফেলে। আর এটি আপনার ওজন কমাতে ওপ্রতভাবে সাহায্য করে। তাই চেষ্টা করবেন এখন থেকে প্রতিদিন সকাল নয়টার আগে অবশ্যই সকালের ব্রেকফাস্ট সারতে হবে।


(৩)ওজন কমানোর খাদ্য তালিকা তৈরিঃওজন কমাতে বা চিকন হতে অনেক গুলো খাদ্যতালিকা রয়েছে। আপনার শরিরের জন্য উপযোগী প্লানটি বলা খুবই দুষ্কর। তাই আপনার উচিত হবে একজন ডায়েটিশিয়ানের স্বরণাপন্ন হয়ে আপনার জন্য উপযোগী খাদ্য তালিকা গ্রহন করে সে অনুযায়ী খাদ্য খাওয়া। আর আপনি যদি চিকিৎসকের কাছে যেতে না পারেন তবে আপনি আপনার বিএমআর হিসেব করে আপনার খাদ্য তালিকা বানাতে পারেন। 


চিকন হওয়ার কিছু জনপ্রিয় খাদ্য তালিকার নাম গুলোর মাঝে অন্যতম হলো লো কার্ব, কিটো ডায়েট, জিএম ডায়েট ও ক্রাশ ডায়েট। উপরিউক্ত ডায়েট গুলো নিয়ে রিচার্স করে আপনিও ডায়েট প্লান তৈরি করে ফেলতে পারেন।


অন্য পোস্টঃ৭ দিনে ফর্সা হওয়ার ক্রিম 


(৪) কার্বোহাইড্রেট বাদ দিয়ে প্রটিন ধরুন : আমাদের দেশে প্রায় প্রত্যেক দিনের প্রত্যেক বেলা খাবারে কার্বোহাইড্রেট যুক্ত খাওয়া অনেক বেশি পরিমানে থাকে। আর কার্বোহাইড্রেট যুক্ত খাবার আমাদের দেহের ওজন ও ফ্যাট ব্যাপক ভাবে বৃদ্ধি করে থাকে। 


তাই চিকন হতে হলে আপনাকে অবশ্যই কার্বোহাইড্রেট যুক্ত খাদ্য যেমন ভাত রুটি কলা ইত্যাদির পরিবর্তনে মাছ মুরগী ও অন্যান এই জাতীয় খাদ্য খাদ্য বেশি করে খেতে পারেন। 


এছাড়াও গরু ও খাসির মাংস অবশ্যই এড়িয়ে চলবেন তার পরিবর্তনে আপনি মুরগি কবুতর ও অন্যান পাখির মাংস খেতে পারেন। 


কারন কার্বোহাইড্রেট যুক্ত খাদ্য আপনার শরিরের মাংস বৃদ্ধি করে আর অপরদিক প্রটিনযুক্ত খাদ্য আমাদের শক্তি বৃদ্ধি করে। আর এজন্য আপনি চিকন হতে চাইলে অবশ্যই কর্বোহাইড্রেট যুক্ত খাবার বাদ দিতে হবে।



(৫) ওজন কমানোর ব্যায়াম :অভিজ্ঞ চিকিৎসকদের মতে আমাদের দেহকে ফ্যাটমুক্ত ও চিকন সুন্দর ও আর্কষণী করে তুলতে ব্যায়ামের কোনো বিকল্প নেই। নিয়মিত ব্যায়াম করার ফলে দেহের অতিরিক্ত ফ্যাট নির্গত হয়ে শরীর অনেক আকর্ষনী ও সুন্দর্য বাড়িয়ে তুলে।


 প্রতিদিন নির্দষ্ট একটি সময় ধরে ব্যায়াম করলে আপনি অবশ্যই চিকন হয়ে উঠবেন। প্রতিদিন একটি সময় মেনে ব্যায়াম করার ফলে আপনি অতি সহজে চিকন ও আকর্ষণীয় হয়ে উঠতে পারেন।ব্যায়াম করার সবচেয়ে সঠিক সময় হলো সকাল ও বিকাল। আপনি চিকন হওয়ার জন্য প্রতিদিন পঁয়তাল্লিশ মিনিট ব্যায়াম করতে পারেন।


চিকন বা মেদ কমানোর কিছু গুরুত্বপূর্ণ ব্যায়ম হলো হাঁটা দোড়ানো, জগিং করা সাতরানো আরো অনেক ব্যাযাম আছে যেগুলো আপনি মেদ কমানোর জন্য বা চিকন হওয়ার জন্য করতে পারেন। এছাড়াও আপনি ঘরে বসে যৌগ ব্যায়াম করতে পারেন।


অন্য পোস্টঃরাতারাতি ফর্সা হওয়ার কয়েকটি ঘরোয়া উপায় 


(৬) বিভিন্ন খাদ্য পরিহার করতে হবেঃমোটা সাস্থ চিকন করতে হলে আপনাকে বিভিন্ন খাদ্য ছাড়তে হবে আর তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো যেমন ফাস্টফুড বিভিন্ন কোল্ড ড্রিংকস। এসকল খাবার খেতে ভালো লাগলেও চিকন সাস্থ গ্রহন করতে হলে আপনাকে এগুলো চাড়তেই হবে। 


কারন এগুলোর মধ্যে অনেক চিনি মিশানো থাকে যা শরিরের জন্য ক্ষতিকর। এছাড়াও ফাস্টফুডে আছে বিভিন্ন ফ্যাট উপাদান যা আপনাকে মোটা হতে সাহায্য করে। আর এই ড্রিংকস গুলোতে অত্যাধিক চিনি থাকায় এগুলো দীর্ঘদিন খাওয়ার ফলে আপনার ডায়াবেটিস ও হৃদরোগ ও হতে পারে। তাই চিকন স্লিম বা আকর্ষণী হতে হলে অবশ্যই আপনাকে কোমল পানীয় ও ফাস্টফুড ছাড়তে হবে।


(৭)বেশি করে পানি পান করাঃ  প্রাকৃতিক ভাবে চিকন হতে গেলে বেশি করে পানি পান করা লাগবেই।  আপনি যদি দৈনিক দশ থেকে বারো গ্লাস পানি খেতে পারেন তাহলে আপনার শরির খেতে ব্যাপক পরিমান ফ্যাট ও ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থ নির্গত হতে থাকে।


বেশি পানি পান করার ফলে আমাদের দেহ হাইড্রেট থাকে। এছাড়াও আমাদের শরীরে চর্বি জমতে দেয় না পানি। এবং চর্বি কে দ্রবিভুত করে এটি। প্রতিবেলা খাওয়ারপ আগে এক গ্লাস পানি খেতে পারলে আপনার খাদ্য চাহিদা ও অনেক কমবে।


(৮) রাতের খাদ্য তাড়াতাড়ি শেষ করুনঃ প্রতিরাতে ঘুমানোর পূর্বে বেশি পরিমানে না খেয়ে কম খেতে হবে এবং রাতের খাবার ঘুমানোর এক বা দেড় ঘন্টা আগেই সেরে ফেলতে হবে। এরপর একটু হাঁটুন এতে খাদ্য বার্ন হতে পারে। ফলে দেহে চর্বি জমার সুযোগ কম থাকে।


(৯) সটিকভাবে ঘুমানোঃ এটি মাথায় রাখতে হবে যে দৈনিক আট বা নয় ঘন্টা ঘুম নিশ্চিত করতে হবে। কারন ঘুম যাওয়ার মাধ্যমে আমাদের শরিরের ঘাটতি গুলো দূর হয়ে থাকে। প্রতিরাত দশটা থেকে এগারোটার মধ্যে ঘুম যেতে হবে আর কাজ না থাকলে আরো তাড়াতাড়ি ঘুমানো উত্তম হবে।


(১০) চিন্তা করা যাবে নাঃ অতিরিক্ত চিন্তার ফলে আমাদের দেহের পরিপাক তন্ত্র সঠিকভাবে খাদ্য হজম করতে পারে না এবং খাদ্য ফ্যাট হয়ে পড়ে। তাই চিন্তা করা যাবে না।


অন্য পোস্টঃমুখের কালো দাগ দূর করার ঘরোয়া উপায় 


পরিশেষে,মনে রাখতে হবে যে আপনি একদিনে মোটা হননি। আপনার শরিরে চর্বি জমতে জমতে আস্তে আস্তে মোটা হয়েছেন। তেমনি আপনি চাইলে চিকন ও একদিনে হবেন না। আপনাকে ধর্য ধরে সাস্থকর উপায় গুলো মেনে আস্তে আস্তে চেষ্টা করতে হবে।  আর মনে রাখবেন যে চিকন হওয়ার জন্য কোন প্রকার ওষধ গ্রহন না করতে করন এতে আপনার ক্ষতি অনেক বেশি হবে। এই ছিল চিকন হওয়ার ব্যপারে আমাদের আর্টিকেল। আশা করি চিকন হওয়ার সঠিক গাইডলাইন আজকের এই আর্টিকেল থেকে পেয়ে গেছেন।

Akash

প্রযুক্তির খবর, শিক্ষা ও ইন্সুরেন্স, ভিসার খবর, স্বাস্থ্য টিপস ও অনলাইনে আয় সম্পর্কিত তথ্যের বিরাট একটি প্ল্যাটফর্ম।

Post a Comment (0)
Previous Post Next Post